রাখাইনে নিজ বাড়িঘরে যেতে পারেনি স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গারা

0

বাংলাদেশে আশ্রয়ে থাকা বেশকিছু রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে স্বেচ্ছায় রাখাইনে ফিরে গেছে বলে দাবি করেছিল মিয়ানমার। কিন্তু সেখানে পৌঁছে এসব রোহিঙ্গা এখন হতাশ হয়ে পড়েছেন। কারণ জন্মভূমির টানে তারা রাখাইনে ফিরে গেলেও সেখানে এখনো তাদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নানা কঠোর পরিস্থিতির। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে এসব রোহিঙ্গা ফিরে যেতে পারেননি তাদের বাড়িঘরেও। যদিও গত মাসে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক আদালত (আইসিজে) রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিতে মিয়ানমারকে চার দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নের আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের এ বয়ান আইসিজের আদেশ বাস্তবায়নে যে মিয়ানমারের কোনো সদিচ্ছা নেই, তাই প্রতিষ্ঠিত করছে। 
তার ওপর সহিংসতাকবলিত রাখাইন ও চীন রাজ্যে আবারও আগামী তিন মাস ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করতে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে মিয়ানমারের পরিবহন ও যোগাযোগবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে তুংবায়ো সীমান্ত অতিক্রম করে স্বেচ্ছায় রাখাইন ফিরে যাওয়া ছবি নামে একজন রোহিঙ্গা কথা বলেন রেডিও ফ্রি এশিয়ার সঙ্গে। ছবি জানান, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা থেকে বাঁচতে ওডুং গ্রাম থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছিলেন তিনি। এর পর তার ঠাঁই হয় উখিয়ার থাইংখালি ক্যাম্পে। ৩৫ বছর বয়সী ছবি বলেন, রাখাইনে ফিরে তিনি দেখতে পেয়েছেন তার গ্রাম এখন মরুভূমির রূপ নিয়েছে। কিন্তু বাড়ি ভাড়া করে থাকার ক্ষমতা নেই তার। তাই এখন তারা অন্য রোহিঙ্গা গ্রামবাসীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন, যেন তারা আসল সম্প্রদায় গড়ে তুলতে পারেন।
 ছবি বলেন, ‘যখনই ওডুং গ্রামে যাই তখনই আমার পিছনের দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। এখন ওই গ্রামে কোনো বাড়ি নেই। এখনো ওই গ্রামে ফিরতে চাই আমি। যদি ৫ থেকে ১০টি বাড়ির মালিককে বোঝাতে পারি গ্রামে ফিরে যাওয়ার জন্য, তবে ওডুংকে আমরা নতুন করে গড়ে তুলব। এখন আমরা একটি বাড়ি ভাড়া করে আছি। ভাড়া অনেক বেশি। তাই মিয়ানমারে ফেরার পর আমরা খুব কঠিন অবস্থা মোকাবিলা করছি।
ফিরে যাওয়া মোহাম্মদ শাওরি নামে আরেক রোহিঙ্গা জানান, বাংলাদেশের শিবিরে এক বছরের বেশি সময় অবস্থান করেন তিনি। পরে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এক বছর আগে তিনি স্বেচ্ছায় রাখাইন ফিরে যান। আগে তিনি রাখাইনের তুংপায়ো শহরের মেটিকি গ্রামে বসবাস করতেন। ফিরে যাওয়ার পর এখন তিনি মংডু শহরে একটি বাড়ি ভাড়া করে থাকেন। মাসিক এক লাখ কিয়াত (৬৭ ডলার) দিতে হয় বাড়ি ভাড়া। শাওরি বলেন, এত ভাড়া আমি আর বহন করতে পারছি না। এখন স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে বাসা ভাড়া দিচ্ছি। আমাদের হাতে আর কোনো অর্থ নেই।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com