বগুড়ার নন্দীগ্রামে ২০০ টাকা চুরির অভিযোগে দুই কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন, গ্রেফতার ২
বগুড়ার নন্দীগ্রামে ২০০ টাকা চুরির অভিযোগে দুই কিশোরকে বাজারের মধ্যে প্রকাশ্যে রশি দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১ এপ্রিল) নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমগীর হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে রোববার (৩১ মার্চ) রাতে নির্যাতনের শিকার কিশোর সুমনের বাবা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে আটজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। বুধবার (১ এপ্রিল) নন্দীগ্রাম পৌরসভার নামুইট তিনমাথা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেফতাররা হলেন নন্দীগ্রাম পৌরসভার নামুইট গ্রামের মাতব্বর নজরুল ইসলাম ও কাচু প্রামানিক।
এছাড়া নির্যাতনের শিকার দুই কিশোর উপজেলার তাঁরাটিয়া এলাকার মৃত আব্দুস সালামের ছেলে মুর্শিদুল ও ভাটরা গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে সুমন।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, নামুইট তিনমাথা বাজারে ওয়াক্ত নতুন জামে মসজিদের দানবাক্স থেকে টাকা চুরির অভিযোগ তুলে দুই কিশোরকে রাস্তা থেকে ধরে আনে ওই গ্রামের মাতব্বর নজরুল ইসলাম ও কাচু প্রামানিক। পরে গ্রামের কয়েকজন মোড়ল একত্রিত হয়ে দুই কিশোরকে রশি দিয়ে গাছে বেঁধে সালিশ বসানো হয়। এসময় নির্যাতন শুরু হলে গ্রাম্য মোড়লদের হাতে-পায়ে ধরেও রক্ষা পায়নি দুই কিশোর। কয়েকজন ব্যক্তি মারধর না করার অনুরোধ করলেও গ্রাম্য মোড়লরা ছিলেন বেপরোয়া।
নির্যাতনের শিকার সুমন জানায়, তারা বাবা-ছেলে অটোভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। সকালে দুই বন্ধু অটোভ্যান নিয়ে নন্দীগ্রাম শহরের দিকে যাচ্ছিলো। নামুইট মোড়ে ভ্যান থামানোর সঙ্গে সঙ্গে পেছন থেকে চোর চোর করে চিৎকার করে নামুইট গ্রামের মাতব্বর নজরুল। কয়েকজন মোড়ল ও স্থানীয় লোকজন এসে যাচাই না করেই দুই কিশোরকে মারতে মারতে রাস্তার পাশে নিয়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চোর আখ্যা দিয়ে একঘণ্টা অমানবিক নির্যাতন করা হয়।
এক পর্যায়ে প্রমাণ ছাড়া মারধরের বিষয়ে উপস্থিত কয়েকজন প্রশ্ন তোলায় দুই কিশোরকে মসজিদের ভেতর নিয়ে যায়। সেখানে প্রায় আধাঘন্টা নির্যাতনের পর দুই কিশোরকে নামুইট তিনমাথা মোড়ে এনে কড়ইগাছে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে।
তবে গ্রাম্য মাতব্বররা দাবি করেন, ফজর নামাজ শেষে মসজিদ থেকে মুসল্লিরা চলে যাওয়ার পর দুই কিশোর দানবাক্স থেকে টাকা চুরি করে। তাদেরকে আটক করে শাসন করে ছেড়ে দেওয়া হয়।