বগুড়ার আদমদীঘিতে ২৩০ চালকল বন্ধ: বেকার ৭ হাজার শ্রমিক
একটানা লোকসানে ব্যবসার মুলধন হারানোর কারণে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ২৩০টি চালকল (হাসকিং মিল) বন্ধ হয়ে গেছে। এ সমস্ত চালকলের মধ্যে ১৭৮টি একেবারে বন্ধ এবং ৫২টি চালকল সরকারের সাথে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক চাল সরবরাহ করতে না পারায় তাদের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।
বর্তমানে উপজেলায় ৫৪টি সাধারণ চালকল (হাসকিং) এবং ১১টি স্বয়ংক্রীয় (অটোমেটিক) চালকল চালু রয়েছে। অধিকাংশ চালকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চালকলের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় সাত হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
আদমদীঘি উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট সাধারণ চালকল ২৮৪টি এবং স্বয়ংক্রীয় চালকল ১৪টি। সরকারের সাথে চুক্তি ভঙ্গ করায় ৫২টি সাধারণ চালকল এবং তিনটি স্বয়ংক্রীয় চালকলের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। বর্তমানে ১১টি স্বয়ংক্রীয় এবং ৫৪টি সাধারণ চালকল চালু রয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। সংগৃহীত চালের মধ্যে প্রায় চার হাজার মেট্রিক টন সরবরাহ করেছে স্বয়ংক্রীয় চালকল। বাঁকি ৭০০ মেট্রিক টন সরবরাহ করেছে সাধারণ চালকল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধান সমৃদ্ধ এলাকা এবং দেশের সর্ব বৃহৎ খাদ্য গুদাম (সান্তাহার সিএসডি ও সাইলো) এই উপজেলায় অবস্থিত হওয়ায় ৯০ দশকের পর থেকে ব্যাঙের ছাতার মতো এখানে চাতাল ব্যবস্যা গড়ে ওঠে। অনেকে ফসলের জমিতেই চাতাল তৈরি করে চালকলের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসায় ভালো মুনাফা হওয়ায় এর ধারাবাহিকতা চলতে থাকলেও একপর্যায়ে এর গতি থেমে যায় ২০০০ সালের পর থেকে এলাকায় একের পর এক স্বংয়ক্রীয় চালকল গড়ে ওঠায়। ধান সিদ্ধ ও শুকানো ছাড়াই স্বয়ংক্রীয় চালকলে সরাসরি কাঁচা ধান থেকে দ্রুত চাল উৎপাদন হওয়ায় থেমে যায় সাধারণ চালকলের ব্যবসা। স্বয়ংক্রীয় চালকলের সাথে ব্যবসায়ীক প্রতিযোগীতায় টিকতে না পেরে লোকসানে পড়ে একের পর এক সাধারণ চালকল বন্ধ হতে থাকে।