জবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাইলেন

0

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সহকারী প্রক্টর ও আম্মান সিদ্দিকী নামের এক সহপাঠিকে দায়ী করে ফাঁস নেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে অবন্তিকাকে শেষ বিদায় দিতে এসে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁওয়ে অবন্তিকাদের বাসার সামনে থেকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব দাবি জানান বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।

জবির আইনবিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেফতাহুল হাসান বলেন, অবন্তিকা আমার সরাসরি শিক্ষার্থী ছিল। ছোটবোনের মতোই আমি তাকে কাছ থেকে জেনেছি। সে খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। সত্যিকার অর্থে আমাদের জন্য খুব মূল্যবান সম্পদ ছিল। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে আমরা একটি মূল্যবান সম্পদ হারালাম। বিভাগের যেকোনো কর্মকাণ্ডে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতো। ফলাফল সবসময় ভালো করতো। শুধু আমিই নয়, আমাদের আইন বিভাগের সকল শিক্ষকরাই অকপটে স্বীকার করবেন অবন্তিকা কতটা মেধাবী ছিল।

তিনি আরও বলেন, অবন্তিকা আমাদের মাঝ থেকে চলে গেছে। এটি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। অবন্তিকার সঙ্গে বিষয়টি অনেকদিন ধরেই চলে আসছিল। এ বিষয়টি প্রক্টরিয়াল অফিসেও গিয়েছিল। এ নিয়ে যারা অভিযুক্ত ছিল তাদেরকে ডেকে বারবার সতর্ক করা হয়েছে। তারপরও যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে গেল আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সব বিষয়ে তার পরিবারের পাশে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনবিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুনিরা জাহান সুমি বলেন, অবন্তিকার মৃত্যুটা আমাদের জন্য অনেক বেদনার। আমরা এর সঠিক তদন্ত তো অবশ্যই চাই। পুরো দেশবাসী ঘটনাটি জেনেছে। আমাদের সবারই উচিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওপর আস্থা রাখা। উপাচার্য সাদিকা হালিম ম্যাডাম অত্যন্ত ভালো মানুষ। তিনি অবশ্যই এ অবন্তিকার পরিবারের পাশে থাকবেন। আপনারা জানেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক যে ক্ষমতা আছে সেটা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় করবে। আর পরিবার যদি আইনি সহায়তা নেয় তবে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পাশে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মরিয়ম আহমেদ মেহেত বলেন, অবন্তিকাকে ২-৩ বছর ধরে চিনি। সে খুবই মেধাবী ছিল। সে সব কো-কারিকুলার অ্যাকটিভিটিসের সঙ্গেও জড়িত। ওর বিভাগের যে সমস্যাটি ছিল সেটি অনেক আগেই সটআউট হয়ে গেছে। কিন্তু তাকে নিয়মিত বুলিংয়ে রাখার যে ট্রমা, সেটি সে নিতে পারছিল না। তাই হয়ত এ ডিসিশন নিয়েছে। ঘটনার দিনও হয়ত তার সঙ্গে এমন কিছু করা হয়েছে যা সে নিতে পারছিল না একদমই। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৫) মার্চ রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সহকারী প্রক্টর ও আম্মান সিদ্দিকী নামের এক সহপাঠিকে দায়ী করে ফাঁস নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইনবিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ অবন্তিকা। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com