সুপ্রিম কোর্টে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে তা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন থেকে অনুমান করা যাচ্ছে। মানুষের শেষ ভরসাস্থল আদালতেও আজ মানুষের নিরাপত্তা নেই। আদালত পাড়ায় আজ আইনজীবীদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। সাংবাদিকদের নির্মমভাবে পেটানো হচ্ছে। আজ দেশের নাগরিকরা পুরোপুরি অসহায়।’
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ঢাকায় সাংবাদিকদের এক বিক্ষোভ সমাবেশ এ কথা বলেন তিনি।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, ‘নাগরিকদের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে এ সরকার ব্যর্থ হয়েছে। মানুষের জীবন আজ বিপন্ন। ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। ভিন্নমতের লোকদের ধরে গায়েব করা হচ্ছে। মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই।’
এম এ আজিজ বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত। দুর্নীতি, লুটপাট, অনিয়ম ও সরকারের গণবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যাতে কোনো আন্দোলন গড়ে উঠতে না পারে তার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন তৈরি করেছে। এই আইন সাংবাদিকতাকে শেষ করে দিয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্বাধীন বিচার বিভাগ হল জনগণের মৌলিক অধিকার প্রয়োগের শক্তি। অথচ স্বাধীন বিচার বিভাগের অনুপস্থিতিতে আইনের শাসনের পরিবর্তে আমলাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা শক্তি অর্জন করে চলছে। দিন দিন দুর্বল হচ্ছে জনগণ। অধিকার হারাচ্ছে জনগণ।’
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ‘সাংবাদিকরা কোনো পক্ষ নয়, তারা শুধু সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিল। গণমাধ্যম-কর্মীদের পরিচয়পত্র, মাইক্রোফোন ও ক্যামেরা থাকা স্বত্তেও তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। বিরোধী মতের আইনজীবীদের ওপর হামলা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট ডাকাতির ছবি ও নিউজ যাতে সংগ্রহ করতে না পারে তার জন্যই পরিকল্পিত এ হামলা। বিচারালয়ে সাংবাদিকদের ওপর এমন হামলা ও ভোট ডাকাতির মেনে নেয়া যায় না।’
সুপ্রিম কোর্টে দায়িত্বপালনরত সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে কদমফুল ফোয়ারা, তোপখানা রোড এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাবে এসে প্রতিবাদ সমাবেশে করে।
সমাবেশে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, একুশে পদকপ্রাপ্ত ছড়াকার ও সিনিয়র সাংবাদিক আবু সালেহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি বাছির জামাল, রাশেদুল হক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, জাতীয় প্রেসক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য কাজী রওনাক হোসেন, শাহনাজ বেগম পলি, সিনিয়র সাংবাদিক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া, মহসিন হোসাইন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম-সম্পাদক শাহজান সাজু, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, দফতর সম্পাদক ডি এম অমর, রফিক লিটন, জেসমিন জুঁই প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।