‘যুগপৎ আন্দোলনে জনগণের আস্থা বেড়েছে’

0

রমজানের আগে রাজপথে জনসম্পৃক্ততামূলক আরো বেশ কিছু বড় কর্মসূচি গ্রহণের পরিকল্পনা করছে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরা। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারির আগেই নতুন কর্মসূচি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানা গেছে। কর্মসূচির ব্যাপারে আলোচনার টেবিলে রয়েছে রোড মার্চ, মানবপ্রাচীর ও ঢাকায় মহাসমাবেশ করাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব।
বিগত ১০টি বিভাগীয় সমাবেশ যেমন সাড়া ফেলেছিল, বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনে সম্পৃক্ত দল ও জোটের কাছে সে ধরনের বৃহত্তর কর্মসূচির প্রস্তাব চেয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোটসহ অন্যান্য জোট ও দল ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রস্তাবও দিয়েছে।

জানা গেছে, গত ডিসেম্বর থেকে যুগপৎ আন্দোলন শুরু হওয়ার পর দু-একটি কর্মসূচি ছাড়া অন্যগুলো সাদামাটাভাবে পালিত হওয়ায় দায়িত্বশীল নেতারা কর্মসূচি জোরালো করার চিন্তা করছেন। বিএনপি প্রতিটি কর্মসূচিতে নেতাকর্মী ও জনগণের বিপুল সমাগমের দিকে জোর দিচ্ছে। গতকাল ১২ দলীয় জোটের সাথেও কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছে বিএনপি।
বিএনপির পক্ষ থেকে জোট নেতাদের বলা হয়েছে, তারা বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করতে চান। কিন্তু তা হবে শান্তিপূর্ণ। আন্দোলন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কোনো কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে না বলেও জানিয়েছে বিএনপি। গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদেরও বিএনপি একই কথা বলেছে। সূত্রমতে, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই নতুন কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হতে পারে। আজ বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক রয়েছে। বৈঠকে পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে আলোচনা হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। প্রয়োজনের নিরিখে কর্মসূচিতে পরিবর্তন আসবে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়েই ১০ দফা দাবি আদায়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

গত ৩০ ডিসেম্বর রাজধানীতে গণমিছিলের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়। এ পর্যন্ত চারটি কর্মসূচি যুগপৎভাবে পালিত হয়েছে। এর মধ্যে গণমিছিল ও গণ-অবস্থান কর্মসূচি ব্যাপক ভিত্তিতে পালিত হলেও অন্য কর্মসূচি ছিল অনেকটাই সাদামাটা। কয়েকটি কর্মসূচি সাদামাটা হওয়ায় রাজধানীতে এককভাবে পদযাত্রার কর্মসূচি গ্রহণ করে বিএনপি। চার দিনের এই পদযাত্রা কর্মসূচি এখন চলছে। বিএনপি প্রথমবারের মতো এ ধরনের কোনো কর্মসূচি পালন করছে। সূত্র মতে, রাজধানীতে আন্দোলন চাঙ্গা রাখতে চায় বিএনপি। এ কারণে রমজানের আগে বড় কয়েকটি কর্মসূচি দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

‘যুগপৎ আন্দোলনে জনগণের আস্থা বেড়েছে’ : গতকাল রোববার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির সাথে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে জনগণের আস্থা বেড়েছে। তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনে অবশ্যই মানুষের মধ্যে একটা আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো এই দাবির (১০ দফা দাবি) সাথে একমত হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তারা লড়াই করছেন, সংগ্রাম করছেন। এটি আন্দোলনে নিঃসন্দেহে অনেক বড় মাত্রা যুক্ত করেছে এবং জনগণকে আশ্বস্ত করেছে।

‘পদযাত্রা প্রসঙ্গে’ : পথযাত্রা কর্মসূচিকে বিএনপির মরণযাত্রা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদেরের কিশোর কুমারের একটা গান আছে না, ওইটা উনার মনে পরেছে। উনি নিজের চিন্তা করছেন কি না আমি জানি না। আমরা পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে এইটুকু বলতে পারি, আমাদের পথযাত্রার মধ্য দিয়ে একটা নতুন মাত্রা সৃষ্টি হলো এবং জনগণের মধ্যে একটা আকাক্সক্ষা গণতন্ত্রকে ফিরে পাওয়ার জন্য রাজপথে নেমে আসার একটা নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।

‘রাজশাহীর সমাবেশ : রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যবহার’ : মির্জা ফখরুল বলেন, এগুলো নিয়ে খুব বেশি কথা বলার প্রয়োজন আছে বলে আমাদের কাছে মনে হয় না। কারণ বাই দিস টাইম, গোটা জনগণের কাছে আওয়ামী লীগের সরকার ও তাদের যে চরিত্র, তাদের যে কর্মকাণ্ড এটি খুব স্পষ্টভাবে এসে গেছে। আওয়ামী লীগ সবসময় একটা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড পলিটিক্যাল পার্টি। তারা মুখে বলে একটি কাজ করে আরেকটা। তিনি বলেন, সরকার আমাদের প্রোগ্রামের সময় তিন আগে থেকে পরিবহন ধর্মঘট করিয়ে দেয়, তারা তিন আগে থেকে পুলিশকে নামিয়ে দিয়ে রাস্তার মধ্যে বসিয়ে মোবাইল টেলিফোন পর্যন্ত চেক করতে থাকে। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার বিভাগীয় সমাবেশের ১৫ দিন আগে এখানে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। এটি হচ্ছে আওয়ামী লীগের কৌশল যে, তারা বিরোধী দলকে যেকোনো মূল্যে হোক বাধা প্রদান করবে, তাদেরকে তারা কোনোভাবে কর্মসূচি করতে দেবে না। অন্য দিকে ভিন্নমত সহ্য করবে না। আর তারা (সরকারি দল) তাদেরটাকে বলতেই থাকবে, করতেই থাকবে এবং সেই ক্ষেত্রে তারা রাষ্ট্রের সব যন্ত্রকে ব্যবহার করবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com