স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে ভোট গণনার আহ্বান ৯ রাষ্ট্রদূতের
শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণের ভোট দেয়ার অধিকারকে সম্মান জানানো এবং স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে ভোট গণনার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত পশ্চিমা ৯ রাষ্ট্রদূত। যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, কানাডাসহ ৯ মিশন প্রধান এক যুক্ত বিবৃতিতে গতকাল বলেন, আমরা আশা করছি, বাংলাদেশ সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমূখর পরিবেশে জনগণের ভোট দেয়ার অধিকারকে সম্মান জানাবেন এবং স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে ভোট গণনা করবেন। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে ঢাকাস্থ কূটনৈতিক মিশনসমূহের যৌথ বিবৃতি শিরোনামে বৃটিশ দূতাবাসের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে প্রচারিত বিবৃতিতে বলা হয়- ১লা ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঢাকার নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার একটি সুযোগ। ঢাকায় অবস্থিত কূটনীতিক এবং নির্বাচন কমিশনকর্তৃক অনুমোদিত পর্যবেক্ষক হিসেবে আমরা (মিশন প্রধানগণ) ভোট কেন্দ্রসমূহে গণতন্ত্রকে কার্যকর অবস্থায় দেখার প্রত্যাশা করছি। বিবৃতি প্রদানকারী মিশন প্রধানরা হলেন- কানাডার হাই কমিশনার বেনাওয়ে প্রিফন্টেইন, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত সার্লোটা স্নাইটার, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার, বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন, নরওয়ের রাষ্ট্রদূত সিডসেল ব্রোকেন, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এসট্রাপ পিটারসন, নেদারল্যান্ডস-এর চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জেরুন স্টিগস, অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার পেনি মর্টন এবং সুইস দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স সুজান মোলার।
শান্তিপূর্ণ-অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন
এদিকে পৃথক বিবৃতিতে শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন দেখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন। ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের অফিসিয়্যাল ফেসবুক পেজে প্রচারিত এক বার্তায় বলা হয়, আমরা ঢাকার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন কামনা করছি। পোস্টের সঙ্গে একটি ছবিও শেয়ার করেছে দূতাবাস।
এর আগে ভোটের প্রচার চলাকালে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার। সে সময়ও তিনি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপর জোর দেন। তাছাড়া, মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক বিভাগের কর্মকর্তারা দুই সিটির প্রধান চার মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে দু’দফায় বৈঠক করেন।
ওদিকে, বাংলাদেশে নিযুক্ত বৃটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন ‘অবাধ ও সুষ্ঠু’ হবে এবং সেখানে জনগণ ‘শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর’ পরিবেশে’ ভোট দিতে পারবেন। সেই সঙ্গে তিনি জানান, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন কেমন হচ্ছে তা দেখতে এখানকার কূটনৈতিক সহকর্মীদের সঙ্গে তিনিও ভোট কেন্দ্রে যাবেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বৃটেনের বের হয়ে যাওয়া অর্থাৎ ব্রেক্সিট নিয়ে বৃহস্পতিবার নিজ বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বৃটিশ দূত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। কাল (১লা ফেব্রুয়ারি) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে (ডিএসসিসি) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের প্রচারণা চলাকালে মূল প্রতিদ্বন্দ্বি চার মেয়রপ্রার্থীর সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেন বৃটিশ হাইকমিশনার। সেই সব সাক্ষাৎ-বৈঠক এবং আলোচনা ভাল হয়েছে জানিয়ে বৃটিশ দূত ডিকসন বলেন, নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবারের নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণার সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে হাইকমিশনার বলেন, নির্বাচনে বড় ধরনের গণতান্ত্রিক চর্চা হয়। আমি আশা করি, সিটি ভোটের দিনে এবং পরের পরিবেশটিও পুরোপুরি সহিংসতামুক্ত থাকবে। তার মতে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের কোনো স্থানেই সহিংসতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হওয়া উচিত নয়। হাইকমিশনার বলেন, মানুষের সঙ্গে কথা বলা এবং দেশে কী হচ্ছে তা জানা কূটনীতিকদের দায়িত্ব।