শীতে শিশু বারবার অসুস্থ হচ্ছে? জেনে নিন করণীয়-

0

শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় শিশুদের নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে এ সময় নিউমোনিয়া ও সর্দি-কাশির সমস্যায় শিশু ঘন ঘন আক্রান্ত হয়।

এ কারণে শীতে যাতে শিশু সুরক্ষিত থাকে তা নিশ্চিত হবে অভিভাবককে। এ সময় শীতের প্রকোপ ও বিভিন্ন রোগ থেকে শিশুকে বাঁচাতে কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে, জেনে নিন করণীয়-

১. শিশুকে ভালো মানের পর্যাপ্ত শীতের পোশাক পরাতে হবে। বেশিরভাগ শিশুরাই মাথায় টুপি কিংবা গলায় মাফলার রাখতে চায় না। এদিকেও বাবা-মাকে খেয়াল রাখতে হবে। এমনকি শিশুদের যাতে ঠান্ডা লেগে না যায় তার জন্য শীতের তীব্রতা অনুযায়ী পোশাক পরাতে হবে।

২. বেশিরভাগ মায়েরাই শীতে শিশুকে গোসল করাতে ভয় পান। এ ধারণা কিন্তু ঠিক নয়। শীতকালে শিশুকে আরও বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। শিশুর শরীরের তেল ও ময়লা ধুয়ে ফেলতে গোসল করানো জরুরি।

গোসলের জন্য কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন। তবে খুব বেশি সময় ধরে শিশুকে গোসল করাবেন না। গোসল শেষে দ্রুত শরীর ও মাথা ভালোভাবে মুছে ফেলুন। গোসল শেষে শিশুকে নিয়ে কিছু সময় রোদে বসুন।

৩. শিশুর ত্বকের যত্নে এ সময় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের বিকল্প নেই। গোসলের পর শিশুর শরীরে অলিভ ওয়েল অথবা ময়েশ্চারাইজিং বেবি লোশন ব্যবহার করুন।

৪. ঘরের তাপমাত্রা কিছুটা গরম হলে শিশুকে ভারি পোশাক পরিয়ে রাখবেন না। যদি ঘরের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি হয়, তবে সুতি কাপড় পরিয়ে কাঁথা দিয়ে জড়িয়ে রাখুন, যাতে শিশুর ত্বকে বাতাস চলাচল করতে পারে।

ঘরের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রির নিচে হলে সোয়েটার ব্যবহার করতে পারেন। শিশুকে ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। বুকের দুধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে শিশু ঠান্ডা-কাশিতে কম আক্রান্ত হয়।

৫. শীতে শিশুকে বেশি শোষণ ক্ষমতার ডায়াপার পরান। কারণ শীতে ডায়াপার ভিজে গেলে বা লিক করলে শিশুর ঠান্ডা লাগার ঝুঁকি বাড়ে।

এজন্য অবশ্যই উচ্চ শোষণ ক্ষমতার ও লিক-প্রুফ ডায়াপার ব্যবহার করতে হবে। আর মনে করে প্রতি ৬ ঘণ্টা পরপর শিশুর ব্যবহৃত ডায়াপারটি চেঞ্জ করে দিন।

৬. শীতে শিশুদের ঠান্ডা লেগে নাক বন্ধ হয়ে গেলে, রাতে তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এ কারণে রাতে শোয়ার আগে দুই নাকে দুই ফোঁটা ন্যাজাল ড্রপ দিয়ে রাখুন। তাহলে শিশুর ঘুমের আরাম হবে।

যদি ঠান্ডা লাগার কারণে শিশুর কাশি, শ্বাসকষ্ট কিংবা বুকের ভেতর গড়গড় আওয়াজ অথবা বুকের হাড় শ্বাস নেওয়ার সময় ভেতরের দিকে দেবে গেলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

৭. শীতে শিশুকে খাওয়াতে হবে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর খাবার। এ সময় তাদেরকে ভিটামিন সি’যুক্ত খাবার খাওয়াতে হবে। লেবু, কমলা, মাল্টা, আমলকি এসব ফল খেতে দিতে হবে। তবে যারা চিবিয়ে খেতে পারে না, তাদেরকে ফলের রস করে খাওয়াতে পারেন।

৮. বাইরে থেকে দেখতে শিশুকে ভালো দেখালেও ভেতর ভেতর সে গুরুতর অসুস্থ হতে পারে। তাই শিশুর শারীরিক লক্ষণ বুঝতে হবে বাবা-মাকে। শিশুর নাক, কান, পায়ের পাতা, আঙুল ইত্যাদি ধূসর বা ফ্যাকাসে বর্ণের হয়ে গেলে বুঝবেন সে ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছে।

শিশু শীতে কাঁপলে ও তার কথা বলতে সমস্যা হলে বুঝবেন যে তার হাইপোথারমিয়া হয়েছে। এরকম হলে স্েগ সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

৯. শীতে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমাতে ফ্লু’র টিক দিন ৬ মাস বা তার বেশি বয়সী শিশুদেরকে।

১০. শিশুর নাক দিয়ে রক্ত পড়লে আতঙ্কিত হবে না। সর্দি, সাইনাসের সংক্রমণ বা অ্যালার্জি হলে শিশুর নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। এ কারণে শুষ্ক বাতাস থেকে শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে হবে।

এর পাশাপাশি প্রতিদিন শিশুর নাকে স্যালাইন স্প্রে বা নাকের জেল ব্যবহারের মাধ্যমে রক্ত পড়ার সমস্যা রোধ করতে পারবেন।

সূত্র: ভেরি ওয়েল ফ্যামিলি

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com