রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখায় বিএনপির ২৭ দফা বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে: খসরু

0

বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখায় দেওয়া ২৭ দফা বিদেশিদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

তিনি বলেন, বিএনপির ২৭ দফা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। কিন্তু সবাই একটি প্রশ্ন করছে, এটা কি বিএনপি বাস্তবায়ন করতে পারবে? আমি তাদের বলেছি, রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হলে বিএনপিকে ২৭ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে। তার কোনো বিকল্প নেই।

সোমবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) এ সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে ছিল বিএনপির মিডিয়া সেল।

ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খানের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূরুল আমিন বেপারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রমুখ।

বিএনপির রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার রূপরেখা উচ্চ কক্ষের প্রসঙ্গ টেনে আমির খসরু বলেন, নির্বাচনে যাওয়ার আগে পার্টি থেকে কাদের উচ্চ কক্ষে নোমিনেটেড করা হবে তার প্যানেল জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে। এটা জাতিকে জানতে হবে। বিএনপিকে বলতে হবে তারা ক্ষমতায় গেলে কারা উচ্চ কক্ষে যাবে। যখন তারা জানবে, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই লোকগুলো উচ্চ কক্ষে যাবে। সেখানে যদি তারা দেখতে পায়, বিএনপির প্যানেলে ভালো লোক আছে, তখন জনগণ নৈতিক সমর্থন জানাবে। এটাও রাজনীতিতে নতুন চিন্তাধারা।

বিএনপির ২৭ দফার কারণে আওয়ামী লীগের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে বলেও দাবি করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, কারণ প্রত্যেকটি দফা একেকটি ভিন্ন চিন্তা থেকে প্রণয়ন করা হয়েছে। এইগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক ফিলোসফি।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার আজ দেশকে গভীর সংকটে নিপতিত করেছে। এখান থেকে মুক্তি পেতে হলে ২৭ দফা রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপি ২৭ দফা তুলে ধরেছে। বিদেশিদের কাছে খুব বেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে।

আমীর খসরু বলেন, আজকে বাংলাদেশে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি শুরু হয়েছে। দেশের ৬৫ শতাংশ ব্যবসায়ী সংসদে বসে আছেন। তারা তো কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না। আজকে দেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। এটা তো তারাই করছে। আজকে দেশের অর্থনীতি আওয়ামী অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। সুতরাং পরিবর্তন দরকার। আপার হাউসের পরিবর্তন দরকার। যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী তারা সেখানে যাবেন। তখনই দেশের স্থিতিশীলতা আসবে।

আমীর খসরু বলেন, আজকে নব্বই শতাংশ রাজনীতিবিদ বক্স থেকে বেরিয়ে চিন্তার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। তারা বিজনেস মনে করে শুধু। কিন্তু বিশ্ব যে এগিয়ে যাচ্ছে সেটা ভাবে না। সেই জায়াগাটা উপলব্ধি করেই কিন্তু তারেক রহমান এই রুপরেখা দিয়েছেন। যেমন তার বাবা জিয়াউর রহমান সাহসী কাজের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পরে তার মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের মানুষের সব অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। মাঝে স্বৈরাচার সরকার দেশকে পিছনের দিকে নিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, ভঙ্গুর রাষ্ট্রকে বাঁচাতে হলে জনগণের সাথে কিছু চুক্তি বা ওয়াদা দিতে হবে। সেটাই করেছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। যা রাজনীতিবিদরা খুব একটা করতে পারেন না। রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রুপরেখা ঘোষণা দিয়ে তারেক রহমানের নেতৃত্বের যোগ্যতা অনেক উপরে স্থান পেয়েছে।

রেইনবো নেশনের ব্যাখ্যা করে আমীর খসরু বলেন, রেইনবো নেশন হলো- আজকে নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা ও সংস্কৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। এখানে অনেক ধর্মের ও বর্ণের মানুষ বাস করে। সবার ধর্ম, ভাষা ও সংস্কৃতিকে প্রাধান্য বা সম্মান জানানোর জন্য রেইনবো নেশন। সেই জায়গা থেকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদকে মূলে রেখে নতুনভাবে রেইনবো নেশনের কথা বলা হচ্ছে। যা নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এই ধারণা মূলত দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে। রেইনবো নেশন সারাবিশ্বকে বোঝায়।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো মিথ্যাচার। আওয়ামী লীগের নেতা-নেত্রীরা দেশের রাজনীতিতে মিথ্যাচার প্রবর্তন করেছে। সত্যটাকে খুঁজে বের করতে হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com