বিএনপি ক্ষমতার জন্য আন্দোলন করছে না, বিএনপি’র আন্দোলন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের: গয়েশ্বর

0

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বিএনপির এবারের আন্দোলন গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলন। এই সরকারের নির্যাতনের কবল থেকে রক্ষা করতেই বিএনপি আন্দোলন করছে, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আন্দোলন করছে না।

রাজশাহীতে গণমিছিল ও পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহীতে শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে গণমিছিল বের করে বিএনপি। পরে ভুবনমোহন পার্কে পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

অসহনীয় দ্রব্যমূল্য, লাগাতার লোডশেডিং, দুর্নীতি-দুঃশাসন, গুম, হত্যা, মামলা-হামলা, ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, বিএনপির অফিস ভাঙচুর, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আটক নেতাকর্মী ও বেগম খালেদা  জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, দেলোয়ার হোসেন। এছাড়া মহানগর ও জেলা বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।

পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ভোটের অধিকার আদায়ের এই আন্দোলনে আজ মানুষও সামিল হয়েছে।

বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি তুলে ধরে তিনি বলেন, এই সরকার পৃথিবীর সকল স্বৈরাচারী সরকারকে হার মানিয়েছে। ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করে রাখতে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিনা ওয়ারেন্টে এবং কোনো রকম মামলা ছাড়াই আটক করছে। দলের মহাসচিব, যিনি অতি সজ্জন বলে শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীতে পরিচিতি লাভ করেছেন। সেই মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে কোনো কারণ ছাড়াই রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে তুলে এনে আটক দেখিয়ে কারাগারে রেখেছে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, এই সরকার ভাবছে দলের মহাসচিব, দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য সিনিয়র নেতাদের আটক করলে বিএনপির আন্দোলন থেমে যাবে। কিন্তু না তা হবে না। বিএনপির একজন নেতা বাইরে থাকলেও সব ধরনের আন্দোলন চলবে। যার প্রমাণ ঢাকার গণসমাবেশ। কোনো বাধাই বিএনপিকে রুখতে পারেনি। যার প্রমাণ জনগণ, দেশ বিদেশের সকল মিডিয়া।

তিনি বলেন, বিএনপির আর হারানোর কিছু নাই। এখন শুধু পাওয়া আর পাওয়া। শেখ হাসিনার সরকার দেশকে তার পিতার মতো আবারও তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। সকল প্রকার নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। রেমিটেন্স কমে এসেছে। সরকারি রিজার্ভ অনেক কমে গেছে। গার্মেন্টস সেক্টর ধ্বংসের পথে। ব্যাংকের তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন নিত্যাপণ্যের মূল্য বাড়ছে সেদিকে নজর না দিয়ে বিএনপির গণমুখী আন্দোলনকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য এই সরকার উঠে পড়ে লেগেছে।

গয়েশ্বর বলেন, সরকার পেটোয়াবাহিনী দিয়ে ও আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী সন্ত্রাসী দিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হত্যা করছে। মেগা প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা এই সরকার লোপাট করে বিদেশে পাচার করেছে, সুইস ব্যাংকে রেখেছে। বিদেশে বাড়ি গাড়ি সব করে নিয়েছে। এই সকল অন্যায় ও অর্থ লোপাট এবং হত্যার বিচার সময় আসলে করা হবে।

এই সরকারের পতন ছাড়া বিএনপি ঘরে ফিরবে না উল্লেখ করে চলমান সরকার পতনের আন্দোলনে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, আমরা স্থিতিশীল পরিবেশে ও শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। তাই ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে বিএনপির ঢাকার কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।

আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির  সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যদি বর্তমান সরকার পদত্যাগ না করে, গণআন্দোলনের মাধ্যমে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com