মুরলি বিজয়ের জন্য ঘর ছাড়েন দিনেশ কার্তিকের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী
সতীর্থের সঙ্গে স্ত্রীর সম্পর্কের জেরে ভেঙে গিয়েছিল ক্রিকেটার দিনেশ কার্তিকের সংসার। বিচ্ছেদের কয়েক মাসের মধ্যে আর এক ক্রিকেটার মুরলি বিজয়কে বিয়ে করেছিলেন দিনেশের স্ত্রী, নিকিতা। ত্রিকোণ সম্পর্কের এই জটিলতা নিয়ে তখন বিশেষ মুচমুচে সংবাদ হয়নি। কারণ, তিনজনেই এই টানাপড়েন সচেতনভাবে গোপন রেখেছিলেন।
দিনেশ কার্তিক এবং নিকিতা বানজারা ছিলেন ছোটবেলার বন্ধু। শুধু তারাই নন। তাদের বাবা-মায়েদের মধ্যেও ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব ছিল। বলতে গেলে, তারা ছিলেন পারিবারিক বন্ধু। দিনেশ-নিকিতার বিয়ে হয় ২০০৭ সালে। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান একুশ বছর বয়সি দিনেশ তখন ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। মুম্বাইয়ের এক নামী হোটেলে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তারা। নিকিতার শৈশব কেটেছে কুয়েতে। কমার্সে স্নাতক নিকিতা বিয়ের পরে ধীরে ধীরে পরিচিত হন ভারতীয় ক্রিকেট-বৃত্তে। জীবনে তারকা-তকমার সঙ্গে ক্রমশ অভ্যস্ত হচ্ছেন তখন। কয়েক বছরের মধ্যে তার পরিচয় হয় মুরলি বিজয়ের সঙ্গে। কিন্তু সেটা যে নিছক ‘পরিচয়’ নয়, সেটা দিনেশ জানতে পারেন অনেক পরে।
তামিলনাড়ুর ডান হাতি ব্যাটসম্যান মুরলি বিজয়ও তখন ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। জাতীয় দল ছাড়াও ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি দিনেশ কার্তিকের সতীর্থ। দু’জনেই তামিলনাড়ুর। পাশাপাশি, আইপিএল-ও তাদের চেনা ময়দান। বিশেষ সখ্য না থাকলেও তাদের মধ্যে শত্রুতা ছিল না। কিন্তু কে আর জানত একদিন এই অদ্ভুত জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে দুই ক্রিকেটারকে। পারিবারিক জীবনের এই বিতর্কিত অধ্যায় নিয়ে মুখ খোলেননি দিনেশ বা মুরলি, কেউই। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত, একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে দিনেশ জানতে পারেন মুরলি-নিকিতা সম্পর্ক নিয়ে।
পারিবারিক জীবনে ঝড় বয়ে গেলেও বাইরের জীবনে তার জের পড়তে দেননি দিনেশ কার্তিক। ২০১২ সালে নিকিতার সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কোনও অভিযোগ বা পাল্টা অভিযোগের দ্বন্দ্বে গিয়ে মিউচুয়াল ডিভোর্সের পথ বেছে নেন তারা। শোনা যায়, সে সময় নিকিতা অন্তঃস্বত্ত্বা ছিলেন।
দিনেশ-নিকিতার বিচ্ছেদ অবধি সংবাদমাধ্যমের নজর সে দিকে ছিল না। ঘটনা নাটকীয় মোড় নিল, যখন বিচ্ছেদের কয়েক মাস পরে নিকিতা বিয়ে করলেন মুরলি বিজয়কে। জানা গিয়েছিল, কোনও এক আইপিএলের মৌসুমে আলাপ হয়েছিল মুরলি-নিকিতার। কিন্তু কত বছর তারা দিনেশ কার্তিক-সহ সবার কাছ থেকে সম্পর্ক গোপন রেখেছিলেন, সে বিষয়ে দু’জনের কেউেই মুখ খুলেননি।
২০১২ সালে জন্ম হয় নিকিতার প্রথম সন্তানের। ছেলের নাম রাখা হয় নীরব। এরপর আরও একটি পুত্র এবং কন্যার মা হয়েছেন তিনি। তিন সন্তানকে নিয়ে মুরলি-নিকিতার সংসার এখন ভরপুর। স্বামীর ম্যাচ দেখতে প্রায়ই মাঠে যান নিকিতা। ‘ক্রিকেটারের স্ত্রী’ ছাড়াও তার আরও একটি পেশাগত পরিচয় আছে। তিনি একজন শিল্পী। মুম্বাইয়ের একটি থ্রি ডি কাস্টিং সংস্থায় কর্মরত নিকিতা। সালমান খান আর চকোলেটের ভক্ত নিকিতা ভালবাসেন কেনাকাটা করতে আর বেড়াতে যেতে।
বিচ্ছেদের পরে দিনেশ কার্তিকও বেশিদিন একা থাকেননি। ২০১৩ সালে তিনি বিয়ে করেন তারকা স্কোয়াশ খেলোয়াড় দীপিকা পাল্লিকলকে। হিন্দু এবং খ্রিস্টান, দু’টি ধর্মমতে বিয়ে হয় তাদের। এখন দীপিকার খেলার অন্যতম অনুরাগী তার ক্রিকেটার স্বামী।
নিকিতা এবং দীপিকা, দু’জনে নিজেদের কেরিয়ারে উজ্জ্বল হলেও দু’জনের স্বামীই এখন জাতীয় দলে অনিয়মিত। দিনেশ কার্তিক শেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৮-র আগস্টে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। মুরলি বিজয়ের শেষ টেস্ট সে বছরই ডিসেম্বরে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে।