সিটি নির্বাচন : ইভিএম ও পেশিশক্তির ভয়
সরস্বতী পূজার দিনে ভোটকে কেন্দ্র করে হিন্দু সমাজ ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের তারিখ পেছাতে বাধ্য হয়েছে ইসি। ৩০ জানুয়ারির পরিবর্তে পহেলা ফেব্রুয়ারি এই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তবে ভোটের নতুন তারিখ ঘোষণার জন্য পহেলা ফেব্রুয়ারির পূর্ব নির্ধারিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দুই দিন পেছাতে হয়েছে। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি এই পরীক্ষা শুরু হবে।
৩০ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে গত ২২ ডিসেম্বর ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। ওই দিন সরস্বতী পূজা বলে তফসিল ঘোষণার পরপরই তার বিরোধিতা করেছিল পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদও ভোটের দিন পরিবর্তনের দাবি জানায়। কিন্তু তা আমলে নেয়নি ইসি। এরমধ্যে ভোটের তারিখ পরিবর্তনে হাই কোর্টে রিট আবেদন হলে তা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর ইসি ৩০ জানুয়ারি ভোট করার বিষয়ে আরও শক্ত অবস্থান নেয়। ইসির পক্ষ থেকে যুক্তি দেখানো হয়েছিল, ৩০ জানুয়ারিই ভোটগ্রহণের জন্য ‘উপযুক্ত’ দিন। কারণ তার পরের দিন ৩১ জানুয়ারি শুক্রবার বলে সেদিন ভোটগ্রহণের নজির নেই। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে বলে প্রায় এক মাস আর ভোট করা যাবে না।
কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী অনশন শুরু করলে এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কর্মসূচি ঘোষণা করলে ভোটের দিন বদলের দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগসহ অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলো জানায়, ভোটের তারিখ পরিবর্তনে তাদের আপত্তি নেই। প্রধান প্রধান প্রার্থীরাও ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে ইসিকে আহ্বান জানান। শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে অযৌক্তিক বললেও তাদের পক্ষে জনমত জোরালো হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে ১৮ জানুয়ারি শনিবার আকস্মিকভাবে জরুরি বৈঠকে বসে ইসি। বৈঠকে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনারদের টেলিফোনে ডেকে নেওয়া হয়। দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা বৈঠকের পর ইসি ভোটের তারিখ পরিবর্তনের কথা জানায়। তবে পূজার দিনে ভোটের ইস্যু শেষ হলেও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা রয়েই গেছে। ইভিএম ও পেশিশক্তি এই নির্বাচনের বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভোটারদের শঙ্কার কেন্দ্রে রয়েছে ভোটের দিনের পরিবেশ আর ইভিএম। ইভিএম কারচুপির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হবে বলে বিএনপি ও বিরোধীদলগুলো শুরু থেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে। বিরোধীদলীয় প্রার্থীদের নানাভাবে হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া সরকারি দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ করা হয়েছে।
ইভিএম নিয়ে বিতর্ক
ইভিএম-পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক হতো না, যদি ডিজিটাল কারচুপির ভয় না থাকত। মানুষের তৈরি প্রযুক্তি ক্ষমতাসীন দল যেভাবে চাইবেন সেভাবেই অপারেট হবে। ১৯৬০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম ইভিএম পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল। বর্তমানে বিশ্বের ৯০ শতাংশ দেশে এখন ইভিএম-পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। যে কয়েকটি দেশে ইভিএম চালু করা হয়েছিল সে ক’টি দেশে এখন ইভিএম পদ্ধতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি পশ্চিমা দুনিয়ার কোনো আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রে ইভিএম ব্যবহার করা হয় না। কারণ ইভিএম-এ ম্যানিপুলেশন বা কারসাজি করার সুযোগ থাকে। তারা যদি ব্যালট পেপারে ভোট করতে পারে তাহলে বাংলাদেশে ব্যালটে ভোট করতে বাধা কোথায়Ñ এমন প্রশ্ন রেখেছেন পর্যবেক্ষকরা। ২০০৬ সালে আয়ারল্যান্ড ই-ভোটিং পরিত্যাগ করেছে। ২০০৯ সালের মার্চ মাসে জার্মানির ফেডারেল কোর্ট ইভিএমকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে। একই বছরে ফিনল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্ট তাদের তিনটি মিউনিসিপ্যাল নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করেছে। নেদারল্যান্ডসে ই-ভোটিং কার্যক্রম জনগণের আপত্তির মুখে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সারা বিশ্ব যখন ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা প্রকাশ করছে তখন ইসি কার স্বার্থে ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে তা বোধগম্য নয়! ইভিএমে ভোট জালিয়াতি ও ভোট চুরির অফুরন্ত সুযোগ থাকবে না এটি নিশ্চিত করে বলা যায় না। নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম ইতিমধ্যে এক বক্তৃতায় বলেছেন, বুথ দখল করলে ইভিএম-এ জালভোট দেয়া সম্ভব। তাছাড়া ইভিএম-এর মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতেও ভোট কারচুপি করা সম্ভব বলে সমালোচকরা দাবি করছেন। তারপরও নির্বাচন কমিশন ইভিএম নিয়ে ‘গোঁ’ ধরে আছে। তাই বিরোধীরা একে দূরভিসন্ধিমূলক বলে আখ্যায়িত করছেন। কারণ ইভিএম নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন হতাশা ও সমালোচনার ঝড় বইছে তখন এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়! নির্বাচন কমিশন স্বাধীন একটি কমিশন। এটি কারো অজানা নয়। তবে এই কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে যখন জনমনে প্রশ্ন দেখা দেয় তখন কারো বুঝতে বাকি থাকে না যে কমিশন হচ্ছে একটি কাগুজে বাঘ। আর এ কারণেই গত বছরের ১২ ডিসেম্বরে টিআইবির পক্ষ থেকে বলা হয় যে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সব কমিশনারের আশু অপসারণ ও নির্বাচন কমিশনকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর বিকল্প নেই। বিষয়টিতে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ কামনা করে সংগঠনটি। কারণ হিসেবে টিআইবি বলেছে, একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান যেভাবে একের পর এক কেলেঙ্কারির জন্ম দিচ্ছে তা পুরো জাতির জন্য ক্ষতিকর।
ইভিএম নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটির বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেছেন, ‘আমরা ইভিএম এর ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছি। আমরা প্রযুক্তি বিরোধী নই, কিন্তু ভোট দেয়ার ক্ষেত্রে এ প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে আমাদের আশঙ্কা ও আপত্তি রয়েছে। কারণ, নির্বাচন কমিশন নিজেরাই স্বীকার করেছেন, ইভিএম ব্যবহার করার মতো নিজস্ব লোকবল তাদের নেই, এ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে তাদের লোক ধার করতে হচ্ছে। দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ও ভোটাররা ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে, কিন্তু ইসি এখনো ইভিএম ব্যবহার না করার বিষয়ে আমাদের কিছুই জানায়নি। নির্বাচন কমিশনকে বলবো, দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের ইচ্ছার কথা বিবেচনায় এনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন।
বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য মতে, ইভিএম দিয়ে ভোটের ফলাফল পাল্টে দেয়া যেমন সম্ভব তেমনি এক টিপে ৫০টি ভোট দেয়া সম্ভব। এমনকি বিদেশের মাটিতে বসেও ইভিএম হ্যাকিং করা যায় এবং একটি ইভিএম হ্যাকিং করতে এক মিনিটের বেশি সময় লাগে না। দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা বেশি জরুরি। অথচ নির্বাচন কমিশনের সে দিকে দৃষ্টি অন্ধের হাতি দেখার মতো। অতীতের নির্বাচনগুলোতে সরকারি দলের মহড়ার কারণে বিরোধী দলের প্রার্থীর এজেন্টরা কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। এ অবস্থা এবারো বিদ্যমান থাকলে ইভিএমের জটিলতা আরো বাড়বে। ক্ষমতাসীন দলের অতি উৎসাহী মাসলম্যানরা বিরোধী প্রার্থীর ভোটারদের ইভিএমের বাটনে হাত দিতে দেবে না, বলবে আপনার কষ্ট করার দরকার নেই, আমরাই বাটন চেপে ভোট দিয়ে দিচ্ছি। নির্বাচনে পেশিশক্তির ব্যবহার হবে না এমন গ্যারান্টি কি নির্বাচন কমিশন দিতে পারবে! গত ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হয়েছে। ভোট কেন্দ্রে ভোটাররা গেলেও তারা গোপন কক্ষে গিয়ে নিজের ইচ্ছামতো ভোট দিতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী। ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা দখলে নেয়া কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের ফিঙ্গার দেয়ার পর জোর করে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করছে। অনেক ক্ষেত্রে নিজেরাই সেই ভোট দিয়ে দিয়েছে। বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনে ১৭০টি কেন্দ্রের ১ হাজার ১৯৬টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ হয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে। ভোট শুরু হওয়ার দুই-তিন ঘণ্টার মধ্যে সব কেন্দ্র থেকে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের ৬০-৭০ গজ দূরে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা গলায় নৌকা প্রতীকের কার্ড ঝুলিয়ে পাহারা দিয়েছেন। বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে তারা ভোটারদের প্রশ্নও করেন। মনঃপুত জবাব না হলে ভোট না দিয়ে অনেককেই ফিরে যেতে হয়েছে। এ অবস্থায় বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান পুনরায় নির্বাচনের দাবি করেছেন। গণমাধ্যমের খবরে এমন অনিয়মের চিত্র ফুটে উঠলেও নির্বাচন কমিশন কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। একই কায়দায় রাজধানীর দুই সিটি নির্বাচনের ভোট ডাকাতির মঞ্চ প্রস্তত করছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। বিএনপি ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়ে ইভিএম বাতিলের দাবি জানিয়েছে।
সিটি নির্বাচনের হামলা ও হুমকি
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখানো, কর্মী-সমর্থকদের মারধর ও হুমকি দেয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ করছেন প্রার্থীরা। রয়েছে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রঙিন পোস্টার ও ফেস্টুন ছাপানো, যান চলাচলে বিঘœ ঘটিয়ে নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ অন্য সাধারণ অভিযোগও আছে। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের দফতরে এ ধরনের লিখিত অভিযোগ করেছেন মেয়রপ্রার্থীসহ অর্ধশত কাউন্সিলর প্রার্থী। অভিযোগকারীদের বেশিরভাগই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী। এছাড়া জাতীয় পার্টির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের কয়েকজন বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীও রয়েছেন। দুই রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতর সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। ভোটের তারিখ যত ঘনিয়ে আসছে অভিযোগের সংখ্যাও বাড়ছে। বেশি অভিযোগ জমা পড়ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশকে দায়িত্ব দিচ্ছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। কিন্তু এখন পর্যন্ত অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি ইসিকে।
মিরপুর শাহ আলী মাজার এলাকায় ১২ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের প্রচারণা সমাবেশে হামলা হয়। এ সময় তাবিথ আউয়াল অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন জয়বাংলা সেøাগান দিয়ে প্রচারণায় হামলা করেছে। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন বিভিন্নভাবে বাধার মধ্যেও নেতাকর্মীরা দিনের বেলায় স্বাভাবিকভাবে প্রচারে অংশগ্রহণ করছেন। যখনই আমরা প্রচার বন্ধ করে দেই, রাতের পর রাত ওনাদের বাসায় খোঁজখবর নিচ্ছে, কখনো ইউনিফর্ম পরে, কখনো সাদা পোশাকে। নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলতে কিছু নেই। শত বাধার পরও বিএনপি নেতাকর্মীরা শান্ত আছেন। তারা যতই উসকানি দিক আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মাঠে আছি, থাকব। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে আমরা অভিযোগ করলেও কোনো অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না। উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরে এক নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান সেগুনের উপর দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। গত ১১ জানুয়ারি বারিধারার জে-ব্লকে পানির পাম্প সংলগ্ন এলাকায় প্রচারের সময়ে ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আতাউর রহমান প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেন। পাশাপাশি প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে বলে তিনি জানান। উত্তর সিটির ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জাইদুল ইসলাম প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রচারে বাধা দেয়ার অভিযোগ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, প্রচারের সময় মাইক ও প্রচারকারীকে মারধর করা হয়।
ঢাকা উত্তরের চেয়ে দক্ষিণ সিটিতে বেশি অভিযোগ জমা পড়ছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে দু’শ থেকে তিনশ’ লোকজন নিয়ে নিজের ওপর হামলার অভিযোগ করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া। এতে তিনি উল্লেখ করেন, শান্তিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি মিটিং থেকে ডেকে নিয়ে তার ও তার ছেলের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় এবং কিলঘুষি দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়।তিনি প্রাণ বাঁচাতে স্কুলে আশ্রয় নিলে প্রতিপক্ষের লোকজন স্কুল ঘিরে ফেলে। প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। দক্ষিণের বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেন, ধানের শীষের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। যারা পোস্টার লাগাতে যাচ্ছে তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে। এমনও হুমকি দেওয়া হচ্ছে, পোস্টার লাগাতে এলে পুলিশে দেবে। পোস্টার লাগানো কি অপরাধ? তা হলে কেন থানা-পুলিশের হুমকি দেবে? এমন অনেক প্রশ্ন, পশ্নই থেকে যাচ্ছে। আগের পথেই হাটছে ইসি। সামগ্রিকভাবে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ অনুপস্থিত।