মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধের বিধান কেন সংবিধান পরিপন্থি নয়: হাইকোর্ট
ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাতে পুলিশ কমিশনারের সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা সংক্রান্ত বিধান কেন অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
রোববার এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো: মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো: ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ চারজনকে বিবাদীকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা সংক্রান্ত বিধান চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানি শেষ হয়। আজ এই রিটের ওপর আদেশের দিন ধার্য ছিল।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মোমেন চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার ররায়।
২০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী, কে এম জাবির, চাঁদুপর বারের আইনজীবী সেলিম আকবর ও রাজধানীর বাসিন্দা শাহ নুরুজ্জামান, মোহাম্মদ ইয়াসিন জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।
রিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অ্যর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ এর সেকশন ২৯ চ্যালেঞ্জ করা হয়। সেকশন ২৯-এ বলা হয়েছে, জনসাধারণের শান্তি বা নিরাপত্তা রক্ষার জন্য পুলিশ কমিশনার যখনই প্রয়োজন মনে করবেন এবং যতদিনের প্রয়োজন বিবেচনা করবেন লিখিত আদেশ দ্বারা কোনো জনসমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, অনুরূপ কোনো নিষেধাজ্ঞা সরকারের অনুমতি ব্যতীত ত্রিশ দিনের বেশি বলবৎ থাকবে না।
আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী বলেন, অধ্যাদেশের সেকশন ২৯ সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক। এটি মৌলিক অধিকারের বিরোধী। কারণ সংবিধান বলছে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে সমাবেশ করার কথা। আর অধ্যাদেশে পুলিশ কমিশনারকে দেয়া হয়েছে নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা। দুটি ভিন্ন জিনিস। তাই এটি সাংঘর্ষিক। এছাড়া রুলসে অস্ত্র ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অস্ত্র কেন ব্যবহার করা হবে?
এর জবাবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সব সময় সমাবেশ বন্ধ করা হয় না। যখন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তখন সমাবেশ বন্ধ করা হয়। যেমন একই স্থানে দুই দল সমাবেশ ডাকলে তো অশান্তি হয়। সংবিধানে আছে জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে। তাই জন শান্তির জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
আর সংবিধান অনুসারে তো সভা সমাবেশে অস্ত্র ছাড়া আসার কথা। কিন্তু যখন বোমা হামলা হয়। অস্ত্রের ব্যবহার হয়। আর এরকম কিছু হলে তো পুলিশের ঘাড়ে দায় পড়ে। সরকারের ওপর দায় পড়ে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে জনস্বার্থের মামলা করতে পারবে সেটা আপিল বিভাগের রায়ে আছে। এখানে সেই শর্ত পূরণ হয়নি। তাই এ রিট খারিজযোগ্য বলে উল্লেখ করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
সূত্র : ইউএনবি