নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের সমাবেশে চেয়ার ছিল, লোক ছিল না: ডা. শাহাদাত
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভার ঘোষণা দিয়েছে। সেখানে শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি থাকবেন। কিন্তু আমরা তো গত ১২ অক্টোবর বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া সমাবেশ করেছি। আপনারা শেখ হাসিনা ছাড়া শুধু ওবায়দুল কাদেরকে দিয়ে মিটিং করেন, দেখেন কী পরিমাণ লোক হয়।’
তিনি বলেন, ‘এখন থেকে খবর পাচ্ছি, সামনের সমাবেশকে ঘিরে আওয়ামী লীগ নাকি বিরিয়ানির দোকানে অর্ডার দিয়ে রাখছে। আমরা তো এসব করিনি। তারপরও জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। মানুষ না খেয়ে, রোজা রেখে যে যেভাবে পেরেছে সমাবেশে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যেও আসার পথে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা দেখতে পাবো ৪ ডিসেম্বর বিরিয়ানির প্যাকেট রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকবে। নারায়ণগঞ্জে তারা একটি সমাবেশ করেছে, সেখানে চেয়ার ছিল লোক ছিল না।’
গতকাল শনিবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি কার্যালয়ের মাঠে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গত বুধবার দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটিকে স্বাগত জানাতে আয়োজিত আনন্দ মিছিলে পুলিশের হামলা ও আহ্বায়ক মন্জুর আলম তালুকদারসহ ১০ জনকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ডা. শাহাদাত বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, চট্টগ্রামের মন্ত্রী-এমপি ও নারায়ণগঞ্জের শামীম ওসমানকে তো আমরা দায়িত্ব দেইনি যে পলোগ্রাউন্ড মাঠে কী পরিমাণ লোক জমায়েত হয়েছে বলতে। জনগণ দেখেছে ১২ অক্টোবর কী পরিমাণ লোক জমায়েত হয়েছিল। সকাল ৭টা থেকে পলোগ্রাউন্ড মাঠে মানুষ আসে। লোক এত বেশি ছিল, পলোগ্রাউন্ড মাঠ পূর্ণ হয়ে নিউমার্কেট, সিআরবি, কাজির দেউড়ি, টাইগারপাস পর্যন্ত মানুষের ভিড়ে যাওয়া যাচ্ছিল না। আপনারা যেহেতু জোর করে বলছেন, এক লাখ লোক হয়েছে। তাহলে আমার একটি প্রস্তাব রয়েছে ওবায়দুল কাদেরের কাছে। আমি যেসব জায়গার নাম বললাম, পলোগ্রাউন্ড থেকে ওইসব জায়গা মাপেন। আপনাদেরই গণনায় বুঝতে পারবেন সেদিন চট্টগ্রামে কী পরিমাণ মানুষ জমায়েত হয়েছিল। আমরা বলছি ১০ লাখের অধিক কিন্তু জনগণ বলছে আরও বেশি।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, ‘প্রহসনমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী বর্তমান সরকার দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে ভয়াবহ দুঃশাসনের এক জঘন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিভিন্ন বাহিনীকে অন্যায়ভাবে নিজেদের হীন স্বার্থে অপব্যবহার করে সরকার তাদের জনগণের মুখোমুখী দাঁড় করাচ্ছে। মানুষের কল্যাণে কাজ না করে ক্ষমতার দাম্ভিকতায় ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে গভীর সংকটে ফেলে দিয়েছে। সারাদেশে বিরোধীদলের ওপর নির্যাতন চালিয়ে দেশকে ত্রাসের রাজ্যে পরিণত করেছে। তিনি নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, জোর করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টিকে থাকতে অবৈধ সরকারের জুলুম নির্যাতনের মাত্রা এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে চলমান নির্যাতন নিপীড়নের ধারাবাহিকতায়ই মন্জুর আলম তালুকদারসহ ১০ জন নেতাকে অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করে রেখেছে। কিন্তু হামলা-মামলার মাধ্যমে বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি, পারবেও না। বিএনপি কোনো সময় আপোস করেনি। এসব বানোয়াট মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘরে আবদ্ধ করে রাখতে পারবে না।