পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ের ২ ঘণ্টা আগে রংপুরে বিএনপির সমাবেশ শুরু
পরিবহন ধর্মঘট উপেক্ষা করে রংপুরে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী দলটির বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা আগেই আনুষ্ঠানিকভাবে এ সমাবেশ শুরু হয়।
শনিবার রংপুর কালেক্টর ঈদগাহ মাঠে রংপুর মহানগর বিএনপি এ গণসমাবেশের আয়োজন করে।
যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমাবেশস্থলের আশপাশে এবং শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির নিন্দা, ভোলা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও যশোরে পুলিশের অভিযানে দলের পাঁচ নেতাকর্মীর মৃত্যু এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
বিএনপি দীর্ঘ দিন ধরে দাবি করে আসছে যে, আগামী সাধারণ নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে। যদিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী সেটির সুযোগ নেই বলে তা তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যসহ সিনিয়র নেতারা বক্তব্য দেবেন।
শুক্রবার বিকেল থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকে এবং তাদের অনেকেই সেখানে রাত কাটায়।
আজকের সমাবেশটি বিভাগীয় পর্যায়ে বিএনপির চতুর্থ সমাবেশ, প্রথমটি চট্টগ্রামে, দ্বিতীয়টি ময়মনসিংহে এবং তৃতীয়টি হয়েছে খুলনায়।
আগামী বছরের শেষের দিকে বা ২০২৪ সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরবর্তী নির্বাচনের জন্য সমর্থন জোগাতে অন্য বিভাগীয় সদর শহরেও অনুরূপ সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে দলটি।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীতে গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শেষ করবে বিএনপি।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে রংপুর শহর কার্যত মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়।
সকাল থেকেই বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন এবং কয়েক হাজার দলীয় নেতাকর্মী সেখানে রাত কাটান।
শুক্রবার সকাল থেকে রংপুর ও সারাদেশের মধ্যে ট্রেন ছাড়া যানবাহন চলাচল কার্যত বন্ধ থাকলেও বিভাগের আট জেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা বাধা অতিক্রম করে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান।
বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, শনিবার তাদের ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্ভাব্য বাধা ও হয়রানি এড়াতে তারা সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছেন।
সমাবেশকে সফল করতে লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা ট্রেন, মোটরবাইক, অটোরিকশা, হিউম্যান হলারসহ বিভিন্নভাবে রংপুরে আসেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা এ অঞ্চলে ধর্মঘট পালন করছে।
তবে রংপুরের ক্ষমতাসীন দল পরিবহন ধর্মঘটের সাথে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে।
মহাসড়কে থ্রি-হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনিক হয়রানি বন্ধের দাবিতে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট পালন করেছে রংপুর জেলা মোটর মালিক সমিতি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেন, তাদের দলের সমাবেশে লোকজন যাতে না আসে সেজন্যই এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
গত সপ্তাহে খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগেও একই ধরনের ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল। তবে দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী বাধা অতিক্রম করে সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সূত্র : ইউএনবি