ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ১ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলের অধিকৃত পশ্চিম তীরে অভিযান অব্যাহত রেখেছে দেশটির সেনাবাহিনী। শনিবার (২২ অক্টোবর) ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ গেছে আরও এক ফিলিস্তিনির। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মাথায় বুলেটের আঘাত লাগে ৩২ বছর বয়সী আরাফাহ রাবির। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় তার।
ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, কালকিলিয়া শহরের দক্ষিণ-পূর্বে একটি চেকপয়েন্ট পার হয়ে অবৈধভাবে ইসরায়েলে ঢুকে পড়েছিল একটি গাড়ি। আটকাতে চাইলে পালানোর চেষ্টা চালায় আরোহীরা। এক ইহুদি সেনাকে ধাক্কাও মারে তারা। সেসময় গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ইসরায়েলি সেনারা।
এদিকে, এক ইসরায়েলিকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে পূর্ব জেরুজালেমে আরেক ফিলিস্তিনিকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে। তেল আবিবের দাবি, আবারও ইহুদি সেনাদের ওপর হামলার চেষ্টা করায় গুলি করা হয় ওই তরুণকে। ঘটনাটি বিবৃতির মাধ্যমে স্বীকার করলেও বলা হয়নি যে পুলিশ কীভাবে তাকে শনাক্ত করেছে, কী ধরনের অস্ত্র নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই ফিলিস্তিনি।
ফিলিস্তিনের সরকারি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে যে, সন্দেহভাজন ব্যক্তির বয়স ১৬ বছর এবং ইসরায়েলের গুলিতে গুরুতর আহত হয়। তবে তার নাম পরিচয় জানানো হয়নি। ইসরায়েলি চিকিৎসকরা তাকে জেরুজালেমের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান।
পূর্ব জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা বেড়েই চলছে। সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে ২০১৫ সালে। ফিলিস্তিনের হামলাকারীরা কয়েক বছর ধরে পূর্ব জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরে একাধিক ছুরিকাঘাত, গুলি এবং গাড়ি-ঘোড়া নিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। গত কয়েক মাসে একাধিক গুপ্ত হামলায় প্রাণ যায় ১৯ ইসরায়েলি সেনার। এরপরই ইসরায়েলি বাহিনীর বেড়ে যায় ধরপাকড়।
তেল আবিবের আগ্রাসনে চলতি বছর মৃত্যু হয় ১২০ জনের বেশি ফিলিস্তিনির। নিহতদের তালিকায় রয়েছে জঙ্গি গোষ্ঠীর বন্দুকধারী, কিশোর ও যুবক যারা কথিত পাথর বা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের পরে গুলিবিদ্ধ হয়। নিরস্ত্র বেসামরিক লোক, পথচারী, বিক্ষোভকারী এবং ইসরায়েলি বসতিবিরোধী কর্মীরা। ইসরায়েলি সৈন্যদের ওপর ছুরি হামলা বা অন্য অস্ত্র নিয়ে সন্দেহভাজন হামলাকারী ব্যক্তিরাও রয়েছেন এ তালিকায়।
ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা অভিযোগ করছেন যে, ‘মৃত্যুদণ্ডের ক্ষেত্র’ বানিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
যদিও ইসরায়েল দাবি করে যে তারা শুধু জীবন-হুমকির পরিস্থিতিতে হামলা চালায়। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ফিলিস্তিনের বাসিন্দাদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে আসছে।
১৯৬৭ সালে ৬ দিনের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় পশ্চিম তীর দখল করে নেয় ইসরায়েল। এরপর থেকে বিভিন্ন দফায় সেখানে বসতি স্থাপন করেছে দেশটি। পশ্চিম তীরে বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ ইসরায়েলি ইহুদির বাস। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এটাকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হয়।
সূত্র: আল-জাজিরা