নবীপ্রেমিকদের গায়ে হাত দিয়ে কখনো কেউ রেহাই পায়নি: হক্কানী পীর-মাশায়েখ পরিষদ
গত ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সা: উপলক্ষে জাতীয় সিরাত উদযাপন কমিটির অনুষ্ঠানে নাতে রাসূল পরিবেশনের সময় উত্তরার জসিম উদ্দীন সড়ক থেকে শিল্পীসহ নয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ‘হক্কানী পীর-মাশায়েখ পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন। সংগঠনের নেতারা বলেছেন, ইতোপূর্বে নবীপ্রেমিকদের গায়ে হাত দিয়ে কখনো কেউ রেহাই পায়নি।
বৃহস্পতিবার নবীপ্রেমিকদের গ্রেফতারের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা এ নিন্দা জানান। তাদের দাবি, এই ঘটনা মুসলমানদের হৃদয়ে চরমভাবে আঘাত হেনেছে।
সভাপতির বক্তব্যে শর্ষিনা দরবার শরিফের পীর শাহ আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, ১২ রবিউল আউয়াল মুসলিম উম্মাহর ঈমান ও আবেগ, বোধ ও বিশ্বাস সংশ্লিষ্ট অতি গুরুত্বপূর্ণ দিন। কিন্তু সেদিন সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে নাতে রাসূল সা: পরিবেশনকালে ছয়জন শিল্পীসহ নয়জন আশেকে রাসূলকে গ্রেফতার করে উত্তরা জোনের ডিসি, এসি ও ওসি মহসীন মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত হেনেছেন। তাদের এ অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।
তিনি বলেন, একশ্রেণির অতিউৎসাহী ও ইসলাম বিদ্বেষী পুলিশ কর্মকর্তা একের পর এক সীমালঙ্ঘন করে যাচ্ছে। ৯ ও ১১ অক্টোবরের ঘটনা নিঃসন্দেহে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। সর্বোপরি ব্যক্তির ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপরও নগ্ন হস্তক্ষেপ।
পীর শাহ আরিফ বিল্লাহ সিদ্দিকী আরো বলেন, আমাদের সংবিধানের (২ক) অনুচ্ছেদে ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। সংবিধানের (১২ঘ) অনুচ্ছেদে ব্যক্তির ধর্মীয় অধিকারও নিশ্চিত করা হয়েছে কিন্তু পরিতাপের বিষয় হলো, ইসলামবিদ্বেষী কিছু পুলিশ সদস্য ১২ রবিউল আউয়াল পালনে বাধা-প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। এর মাধ্যমে মূলত তারা নিজেদের ইসলামবিরোধী চেহারাই দেশ ও জাতির সামনে উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নবীপ্রেমিকদের গায়ে হাত দিয়ে অতীতে কেউ রেহাই পায়নি। ভবিষ্যতেও কেউ পাবে না। দুনিয়া ও আখেরাতে তাদের জন্য কঠিন লাঞ্চনা অপেক্ষা করছে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুফতি হাবিবুর রহমান, গুলশান দরবার শরীফের পীর মাওলানা মুফতি আব্দুল হালিম, হাফেজ মুফতি রফিকুল ইসলাম শরিয়তপুরী, হাফেজ মুফতি ইমামুল হাসান চাঁদপুরী প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন হাফেজে বুখারী হাবিবুল্লাহ ও মুফতি আহমদ শাওকী আফিফি প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান।
সমাবেশে বক্তারা সরকারের প্রতি নবীপ্রেমিকদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া ও চিহ্নিত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান। অন্যথায় তৌহিদী জনতা রাজপথে নেমে আসবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।
উল্লেখ্য, গত ১২ রবিউল আউয়াল জাতীয় সিরাত উদযাপন কমিটির আয়োজনে নাতে রাসূল সা: পরিবেশনের সময় উত্তরার জসিম উদ্দীন সড়ক থেকে গ্রেফতার করা হয় ছয়জন শিল্পীসহ নয়জনকে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে গত ১১ এপ্রিল উত্তরায় সিরাত কমিটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-সমাবেশ করে। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। সেখান থেকে আরো ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই গ্রেফতারের প্রতিবাদেই আজকের প্রতিবাদ সমাবেশ।