মিনিকেট চাল নিয়ে বিতর্ক: চালকল মালিকদের বিরুদ্ধে গভীর যড়যন্ত্র
সম্প্রতি মিনিকেট চাল নিয়ে ওঠা বিতর্ককে চালকল মালিকদের বিরুদ্ধে গভীর যড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছে নওগাঁ জেলা অটোমেটিক রাইস মিল মালিক সমিতি ও ধান্য-চাউল আড়তদার সমিতি। দেশীয় চালকলশিল্প ধ্বংস করতে এবং চালকল মালিকদের হেয় করতে বিভিন্ন মহল থেকে অবৈজ্ঞানিক ও বাস্তবতাবিবর্জিত কথা বলা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) বেলা একটায় নওগাঁ ধান্য-চাউল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতি ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় চালকল মালিকরা এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নওগাঁ ধান্য-চাউল আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা চন্দন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে জেলা অটোমেটিক রাইস মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বেলকন গ্রুপের চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সম্প্রতি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি থেকে উচ্চপর্যায়ের আমলারা বলছেন, মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই। অথচ তারা বলছেন না, মিনিকেট নামে বাজারে প্রচলিত চাল কোন ধান থেকে উৎপাদিত। এ বিতর্ক ওঠার আগে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে বাজারে কমবেশি মিনিকেট চাল ছিল।
লিখিত বক্তব্যে ধান্য-চাউল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরোদ বরণ সাহা বলেন, তারা উত্তরাঞ্চলের নাটোর, নন্দীগ্রাম, সিংড়া, রনবাঘা, চৌবাড়িয়া ও কুষ্টিয়ার কৃষকদের কাছ থেকে মিনিকেট ধান কিনছেন। তাহলে এটা কোন ধান? বিষয়টি স্পষ্ট করা হচ্ছে না। অথচ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, মেশিনে চাল ছাঁটাই বা পলিশ করে চাল ছোট বা লম্বা করা হচ্ছে। বাস্তবতা হলো—দেশের কোনো চালকলে চাল ছাঁটাই বা লম্বা করার কোনো মেশিন নেই।
নিরোদ বরণ সাহা আরও বলেন, পর্যাপ্ত সেচ সুবিধার কারণে গোটা উত্তরাঞ্চলে ইদানীং ব্যাপকভাবে জিরাশাইল ধানের চাষ হচ্ছে। এই জিরাশাইল ধানই দেশের কোনো কোনো অঞ্চলের কৃষকেরা মিনিকেট নামে বাজারে বিক্রি করছেন। এ জন্য জিরাশাইল ধান থেকে উৎপাদিত চাল কোথাও মিনিকেট আবার কোথাও জিরাশাইল নামে বিক্রি করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, মিনিকেট চালের মতো ৫০ বছর ধরে নাজির নামে এক ধরনের চাল বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেটের মতো নাজিরও একটি ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে নাজির নামে কোনো ধান নেই। চালকলে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের ধানের একসিদ্ধ চালকে নাজির বলা হয়। যেমন—কাটারি ধানের এক সেদ্ধ চাল কাটারি নাজির, পাইজামের এক সেদ্ধ চালকে পাইজাম নাজির, বিআর-২৮ ধানের এক সেদ্ধ চাল আটাশ নাজির বলা হয়। কিন্তু বাজারে গিয়ে ক্রেতাদের কেউ বলেন না, পাইজাম নাজির, আটাশ নাজির, কাটারি নাজির চাই। তারা নাজির চাল চান। বাজারে প্রচলিত নাজির চালের জন্য তো চাল ব্যবসায়ী বা চালকল মালিকেরা দায়ী নন।