স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত জেহাদের স্মৃতিস্তম্ভে ছাত্রদলের শ্রদ্ধা
স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত নাজির উদ্দিন জেহাদের ২২তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সোমবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ে স্মৃতিস্তম্ভে তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়।
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ জুয়েলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আক্তার হোসেনসহ ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় ছাত্রদল সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, জিহাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করার মাধ্যমে আমরা নিজেদের জেহাদের মতো দেশপ্রেমিক হিসেবে রূপান্তরিত করতে চাই। জেহাদের আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রত্যেকটি নেতাকর্মী এই সরকারের বিরুদ্ধে একটি গণ আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে নেতৃত্ব দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
নাজির উদ্দিন জেহাদ গণ অভ্যুত্থানের সময় অবরোধ চলাকালে ১৯৯০ সালের এদিনে (১০ অক্টোবর) রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। জেহাদের রক্ত বিদ্যুৎ বেগে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনকে তুঙ্গে নিয়ে যায়। আন্দোলনের অগ্নিশিখা যেন ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র।
পারিবারিক তথ্যমতে, জেহাদের পুরো নাম কে এম নাজির উদ্দিন জেহাদ। তার জন্ম ১৯৬৯ সনের ৬ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার নবগ্রামে। বাবা মরহুম কে এম মাহমুদ এবং মা বছিরুনেচ্ছা। ১০ ভাইবোনের মধ্যে জেহাদ নবম। নব্বইয়ের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের সময় জেহাদ স্থানীয় সরকারি আকবর আলী কলেজে বিএ শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
জেহাদ ছাত্রদলের কলেজ শাখার সভাপতি ও উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। নব্বইয়ের ১০ অক্টোবর বিএনপিসহ সাত দলীয় জোট রাজধানীর পল্টনে মহাসমাবেশের ডাক দিলে অকুতোভয় ছাত্রনেতা জেহাদ নিজ এলাকা থেকে ৬০ জন ছাত্র নিয়ে যোগ দেন সমাবেশে।
এই কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিচার্জ সত্ত্বেও সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে বীরদর্পে অংশ নেন জেহাদ। একপর্যায়ে পুলিশ নির্বিচারে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করলে জেহাদ গুলিবিদ্ধ হন।
মত্যুর আগে জেহাদের দৃপ্ত উচ্চারণ, আমি এসেছিলাম সামরিক স্বৈর সরকার উৎখাতের জন্য। আমি মৃত্যু পথযাত্রী। আমি তার পতন দেখে যেতে পারলাম না। আমার মৃত্যু তখনই স্বার্থক হবে যখন আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈর সরকারের পতন হবে।