আরো মুসলিম দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আনছেন ট্রাম্প
নতুন করে আবারো কিছু মুসলিম দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আনার পরিকল্পনা রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনের। নাইজেরিয়া, কিরগিজস্তান, সুদানসহ আরো কয়েকটি মুসলিম দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এসব দেশের নাগরিকরা বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা পাওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে মিয়ানমারের নামও।
বরাবরই মুসলিম দেশগুলোর প্রতি বিরূপ মনোভাব দেখা গেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। এর আগে বেশ কিছু মুসলিম দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় পড়া সম্ভাব্য দেশগুলো হলোÑ নাইজেরিয়া, সুদান, তানজানিয়া, বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, কিরগিজস্তান ও মিয়ানমার। এর মধ্যে নাইজেরিয়ার ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ, কিরগিজস্তানের ৯০ শতাংশ, সুদান ও ইরিত্রিয়ার অধিকাংশ জনগোষ্ঠীই মুসলিম ধর্মাবলম্বী। তবে এই তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি, প্রয়োজনে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেই জানিয়েছেন, তিনি কিছু দেশে নতুন করে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পরিকল্পনা করছেন। তবে দেশগুলোর নাম প্রকাশ করেননি ট্রাম্প। শিগগিরই এসব দেশের নাম ঘোষণা করা হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এই নিষেধাজ্ঞায় ভুক্তভোগী দেশগুলোর সাথে যুক্তরাষ্ট্র্রের সম্পর্কের অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল। উদাহরণস্বরূপ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ নাইজেরিয়া সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম অংশীদার। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অসংখ্য নাইজেরিয়ান নাগরিক বেশ বিপদে পড়বেন। ট্রাম্প প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যেসব দেশ বায়োমেট্রিক, তথ্যসহায়তা, সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমসহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের অভিবাসনপ্রক্রিয়া ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। এমনকি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে কিছু বলেনি।
বর্তমানে ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া ও ইয়েমেনের নাগরিকরা এবং ভেনিজুয়েলার কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও তাদের স্বজনরা যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন। নিষেধাজ্ঞায় থাকা এসব দেশের অধিকাংশই মুসলিম দেশ। এদের মধ্যে ইরানের ৯৯ দশমিক ৪ শতাংশ, লিবিয়ার ৯৬ দশমিক ৬ শতাংশ, সিরিয়ার ৮৭ শতাংশ, ইয়েমেনের ৯৯ দশমিক ১ শতাংশ ও সোমালিয়ার অধিকাংশ নাগরিকই মুসলিম।
মধ্য আফ্রিকার অপর একটি মুসলিমপ্রধান দেশ চাদ। দীর্ঘ দিন ধরে তারা এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকলেও ২০১৮ সালের এপ্রিলে তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশগুলোর নাগরিকরা এটি থেকে ছাড় পেতে আবেদন করতে পারেন, তবে তাতে সফল হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।