মার্কিন বোমায় জাওয়াহিরির মৃত্যুতে পাকিস্তানের হাত! ক্ষুব্ধ তালেবান
গত জুলাই মাসে কাবুলে মার্কিন বোমায় নিহত হয় আল কায়দা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরি। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘাতের পথে হাঁটছে পাকিস্তান ও আফগান তালেবান। কারণ, আফগানিস্তানের বর্তমান শাসকদের ধারণা পাকিস্তানি আকাশ ব্যবহার করেই হামলা চালায় মার্কিন ড্রোনগুলো। তবে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান।
৩১ জুলাই কাবুলের একটি বাড়িতে ড্রোন হামলা চালিয়ে জাওয়াহিরিকে হত্যা করে আমেরিকা। ওই জঙ্গিনেতাকে হত্যা করতে আফগানিস্তানের মাটিতে মার্কিন সেনার জওয়ানরা পা দেননি। তখনই প্রশ্ন ওঠে, তবে কি পাকিস্তানের আকাশ বা মাটি ব্যবহার করে এই হামলা চালিয়েছে মার্কিন সেনারা?
বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা, ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ সম্পর্কে যে ফাটল তৈরি হয়েছে তা জোড়া লাগাতে তৎপর পাকিস্তান। আর্থিক বিপর্যয় সামাল দিতে অন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল থেকে বড় মাপের প্যাকেজ চাইছে ইসলামাবাদ। কিন্তু আমেরিকার মদত ছাড়া তা সম্ভব নয়। তাই জাওয়াহিরির গোপন তথ্য মার্কিন সেনাকে দিয়ে থাকতে পারে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। একই সন্দেহ করছে তারেবানও। ফলে দুই পড়শি দেশের সম্পর্কে ফাটল আরও চওড়া হচ্ছে।
রবিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা ইয়াকুব বলে, ‘আফগানিস্তানের আকাশসীমায় অবৈধ ভাবে ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারি চালানো দেশের সীমান্তে অনুপ্রবেশ করার শামিল’। ড্রোনগুলো কোথা থেকে আসছে? এই প্রশ্নের উত্তরে ইয়াকুবের স্পষ্ট অভিযোগ, পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার করে আফগানিস্তানে প্রবেশ করছে ড্রোনগুলো।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ‘তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান’ তথা পাকিস্তান তালেবান ও ইসলামাবাদের মধ্যে লড়াই থামাতে মধ্যস্থতা করছে আফগান তালেবান। এমন পরিস্থিতিতে তালেবান নেতৃত্ব পাকিস্তানের ওপর অসন্তুষ্ট হলে ফল ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।
উল্লেখ্য, ৭১ বছরের মিশরীয় জঙ্গিনেতা জাওয়াহিরির মৃত্যুতে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে আল-কায়দা। এই ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে দোহা চুক্তির শর্ত মোতাবেক আল-কায়দাকে আশ্রয় না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে হায়বাতোল্লা আখুন্দজাদার দল। তবে পালটা সরকারি বিবৃতিতে তালেবানের বক্তব্য, কাবুলে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ওয়াশিংটন। এর ফল ভোগ করতে হবে আমেরিকাকে।