রাজনীতি না করলে জিভ টেনে ছিঁড়ে নিতে বলতাম: মমতা

0

পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে পড়ছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের। আর সুযোগ বুঝে বিরোধী সব রাজনৈতিক দল কড়া সমালোচনা করছে তৃণমূলের।

সোমবার (২৯ আগস্ট) তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে আয়োজিত জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব কথা বলেন।

জনসভার শুরুতেই দলনেত্রী বাম, বিজেপি ও গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে কামান দাগেন। তিনি বলেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে বদনাম করা হচ্ছে। বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করা হচ্ছে। রাজনীতি না করলে জিভ টেনে ছিঁড়ে নিতে বলতাম। আমরা লিস্ট করে রাখছি কারা বদনাম করছে।  যে শিক্ষা নিয়ে এত কথা চলছে, তা বিচারাধীন আছে, তাই কিছু বলব না। কিন্তু প্রশ্ন করি, সিপিএমের আমলে কত চাকরি হয়েছে তার নথি কোথায়? টাকা নিয়েছো আর চাকরি দিয়েছো। সিপিএম ৩৪ বছরে রাজ্যটাকে শেষ করেছে আর বিজেপি শেষ আট বছরে দেশটাকে নষ্ট করে দিয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সব জায়গায় কোটি কোটি টাকা দিয়ে সরকার ফেলছে। মহারাষ্ট্র কিনেছ, ঝাড়খণ্ড কিনতে গিয়েছিল আমি থামিয়ে দিয়েছি। দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ফেলার জন্য ৮০০ কোটি টাকার প্ল্যান বানিয়েছে। আর বেঙ্গল ফেলার জন্য সিবিআই, ইডি প্ল্যান বানিয়েছে। মনে রাখবেন, সিবিআই, ইডি, বিএসএফ-এর বিরুদ্ধে অনেক প্রমাণ আমার হাতেও আছে। আমি আইনি প্রক্রিয়া জানি। দেশে আইন আছে। আপনারা আমাকে সিবিআই দেখালে আমরাও কেস করব। দেশে আইন থাকলে কাউকে দরকার নেই। তাই মিডিয়াকে ভয় পাই না। ওরা (বিজেপি) সব মিডিয়াকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছে। ডিজিটাল কিনছে। আমার বিরুদ্ধে ইউটিউব খুলছে। গালি দিচ্ছ। আজ তুমি টাকা খরচ করে গালি দিচ্ছ। আমার সময় এলে তালি দেব। মনে রাখবেন, অন্ধকার কেটে গেলেই আলোর দেখা মেলে। রাত হলেই সকাল হয়। আর সকাল হলে তোমরা যাবে কোথায়? আমরাও জানি কোন দেশে কত টাকা তোমরা রেখেছ!

তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, তোমরা বিএসএফকে দিয়ে ভয় দেখাচ্ছ। বিএসএফ বনগাঁ সীমান্তে মা-বোনেদের ইজ্জত নিয়ে খেলা করছে। এই জন্যই কি তোমরা ১৫ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকেছ? এই জন্য ক্ষমতা চাইছ? স্বাধীনতার ৭৫ বছরে সবচেয়ে বড় লজ্জার বিষয় গুজরাট দাঙ্গাকারীরা ছাড়া পেয়ে যাওয়া। তোমরা (বিজেপি) আমাদের বিরুদ্ধে কেস করে ভয় দেখাবে ভেবেছ? আমায় একজন বলেছে, যাদের গ্রেফতার করতে বলেছে তাই করেছি, তাদের থেকে তো কিছুই মেলেনি। দেখানোর জন্য করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, সব রাজ্য সরকার ভাঙতে কোটি কোটি দিচ্ছ। ২১ সালের ভোটে পশ্চিমবঙ্গের হোটেলগুলোতে বসে কত টাকার খেলা হয়েছে, সব তথ্য আমার কাছে আছে। তোমার একদিন পতন হবে। রাজীব-ইন্দিরা গান্ধীর মতো শক্তিশালী নেতারাও হেরেছে। সেখানে বিজেপি তো কোন ছাড়! সবে বিহার আপনাদের হাত ছেড়েছে। ভোটের আগে কাউকেই আর সঙ্গে পাবেন না। একেবারে শূন্য হয়ে যাবেন।

পশ্চিমবঙ্গে জিততে পার্থ, অনুব্রত, ববি (ফিরহাদ হাকিম), অভিষেক সবাইকে চোর বানিয়ে দিয়েছেন! এমনকি আমাকেও চোর বলছে। আমরা সবাই চোর, আর ওরা সাধু? পার্থ দোষ করলে আমাকেও তার সাথে জড়াচ্ছে। আমাদের অফিসারদের দিল্লি ডাকা হচ্ছে। আমাদের অফিসারদের ডাকলে দিল্লির অফিসারদেরও আমরা ডাকব। তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, বলেন মমতা।

ছাত্র-যুবাদের উদ্দেশে পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি ছাত্র-যুবাদের বলে যাই, মিডিয়া আর বিজেপির কথা শুনবেন না। ওরা চক্রান্ত করে কাজ করছে। কাল যদি ববিকে (কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম) গ্রেফতার করে, ভাববেন সবই সাজানো নাটক। ২১ জুলাইয়ের পর পার্থকে গ্রেফতার করতে হলো। কেন আমি ইডি, সিবিআই নিয়ে কথা বলেছিলাম বলে।

মমতা আরও বলেন, কেষ্ট (অনুব্রত মন্ডল) একজন সাহায্যকারী ছেলে, ওকেও তোমরা গ্রেফতার করেছ। এরপর অভিষেক আজ যা বলল, দেখব আগামীকাল ওকেও গ্রেফতার করে নিয়েছে। যারা ছাত্র আছেন আরও বেশি করে এলাকায় মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখবেন। দরকার হলে ছোট ছোট গ্রুপ বানিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করান। আমার বয়স বেশি হলেও মন কিন্তু এখনো ছাত্রের মতন। মনে রাখবেন ভারতে একমাত্র সৎ এবং সাচ্চা রাজনৈতিক দল যদি কোনোটা থাকে তা হলো তৃণমূল কংগ্রেস। তাই বাধা-ঝড় যাই আসুক না কেন তা সরিয়ে এগিয়ে যান। আর ঝড়ের মধ্যে যারা সড়কে নামতে পারে তারাই তো ছাত্র। আমরা করবো, লড়বো এবং বিজেপিকে হটাবো। বাংলাকে সমস্ত অপশক্তি থেকে বাঁচিয়ে রেখেছি, এবার দিল্লি থেকে বিজেপিকে তাড়িয়ে ছাড়বো। আমি আবার আপনাদের উদ্দেশে বলছি, বিজেপি-সিবিআই, ইডি, প্রেস সবাইকে কিনে নিয়েছে। তাই বিচার পেতে আমাদের পথে নামতেই হবে। তার জন্য প্রস্তুত থাকুন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com