জাতিসংঘ সম্মেলনে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের চুক্তি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: রাশিয়া
জাতিসংঘ সম্মেলনে রাশিয়ার বিরোধিতায় পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক এক যৌথ ঘোষণা আটকে গেছে। শুক্রবার জাতিসংঘ সম্মেলনে ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে রাশিয়া বলেছে, এই চুক্তি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
‘দ্য নিউক্লিয়ার নন-প্রোলিফারেশন ট্রিটি’ নামের এই চুক্তিটি গত পাঁচ বছর পরপর স্বাক্ষরকারী ১৯১টি দেশ পর্যালোচনা করে। এই চুক্তির লক্ষ্য হলো— পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ করা।
ইউক্রেনের পারমাণবিক স্থাপনা— বিশেষ করে জাপোরিঝিয়া ঘিরে চলমান সামরিক তৎপরতাকে ‘গুরুতর উদ্বেগজনক’ উল্লেখ করায় চুক্তিটির খসড়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে রাশিয়া। ২০১৫ সালে সর্বশেষ পর্যালোচনার সময়ও অংশগ্রহণকারীরা একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছিল।
এই চুক্তির বিষয়ে ২০২০ সালে জাতিসংঘ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তা থমকে যায়। পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তারের লাগাম টানার এই চুক্তির বিষয়ে নিউইয়র্কে প্রায় চার সপ্তাহের সম্মেলনের পর যৌথ ঘোষণায় ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে সব পক্ষ।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওং বলেছেন, চুক্তিটি চূড়ান্ত না হওয়ায় তিনি ‘গভীরভাবে হতাশ।’ জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত বনি জেনকিনস বলেছেন, জাতিসংঘ সম্মেলনের এই ফলাফলে গভীরভাবে অনুতপ্ত যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার কর্মকাণ্ডই আজ আমাদের এখানে নিয়ে এসেছে।
মাসব্যাপী আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য গত ১ আগস্ট থেকে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা নিউইয়র্কে জড়ো হন। রাশিয়ার আপত্তির কারণে শুক্রবার সম্মেলনের শেষ অধিবেশন কয়েক ঘণ্টার জন্য স্থগিত হয়ে যায়।
তবে শেষে সম্মেলনের সভাপতি আর্জেন্টিনার গুস্তাভো জালাউভিনেন বলেন, রাশিয়া চুক্তির খসড়া নিয়ে আপত্তি তোলায় চুক্তিতে পৌঁছানোর মতো পরিস্থিতি নেই।
সম্মেলনে রাশিয়ার প্রতিনিধি ইগোর বিশনেভেটস্কি বলেন, ৩০ পৃষ্ঠার বেশি দীর্ঘ খসড়ার চূড়ান্ত বিষয়বস্তুতে ‘ভারসাম্যের’ অভাব রয়েছে। তিনি বলেছেন, চুক্তির খসড়ার কিছু অনুচ্ছেদ নিয়ে আমাদের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের মূল আপত্তি রয়েছে; যা স্পষ্টতই রাজনৈতিক ধাঁচের। তিনি বলেন, কেবল রাশিয়াই একমাত্র দেশ নয় যে এই সমস্যার কথা বলেছে।
সূত্র: বিবিসি, এএফপি।