ব্যালটে ভোট নেয়ার দাবি বিএনপি’র
প্রয়োজনে নির্বাচন পিছিয়ে ইভিএম বাদ দিয়ে ব্যালটে ভোট নেয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বিকালে হোটেল লেকশোরে এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স(এ্যাব) এর উদ্যোগে ‘প্রশ্নবিদ্ধ ইভিএমের কারিগরি অপব্যবহারের মাধ্যমে নির্বাচনী ফলাফল কারচুপির সম্ভাব্য সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে বিএনপি মহাসচিব এই দাবি জানান। ফখরুল বলেন, মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বরে। আরেকটি ১লা ফেব্রুয়ারি আসছে, যে পদ্ধতিতে ঢাকার নগরবাসীর ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হবে। আমরা তীব্রভাবে আপত্তি জানিয়েছি। এখনো বলছি, এই ইভিএম ব্যবহার রাখুন এবং প্রয়োজনে ভোট পিছিয়ে দিয়ে ব্যালটে ভোট নেয়ার ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় এদেশের মানুষ আপনাদেরকে ক্ষমা করবে না। ইভিএমের বিরুদ্ধে জনমত তৈরির আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন, আজকে সবাই জনগণের কাছে বলি একথা যে, তারা অত্যন্ত জোরে তাদের ভয়েস, তাদের কণ্ঠকে সোচ্চার করুন যে, আমরা ইভিএম মানি না।
ইভিএম কখনোই জনগণের সঠিক রায়ের প্রতিফলন ঘটাবে না। আমরা এই ইভিএম প্রত্যাখান করছি। ইভিএম পদ্ধতির বিরোধিতার কারণ ব্যাখ্যা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, মেশিন ব্যবহৃত হয় মানুষের দ্বারা। মেশিনের পেছনের কারা থাকবেন সেটা একটা জরুরি প্রশ্ন। যেহেতু এই মেশিনের পেছনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন আছেন এবং এই সরকার রয়েছে যারা পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাটাকে পরিচালনা করছে তাদের উপরে মানুষের কোনো আস্থা নেই। এবারকার দুই সিটি কর্পোরেশনের পুরো নির্বাচনটা ইভিএম দ্বারা ভোট গ্রহণ করা হবে। আমরা প্রথম থেকে এর আপত্তি জানিয়ে আসছি। নির্বাচন কমিশনেও আমাদের ডেলিগেশন গিয়ে আপত্তি জানিয়ে এসেছেন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, গতকাল আমাদের মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল সরকারি দলের একজন কাউন্সিলর প্রাকাশ্যে তার ওপর আঘাত করলেন, তার ওপর আক্রমন চালালেন। দূঃখজনকভাবে শুধু না, দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জাজনকভাবে ওই দলের (আওয়ামী লীগ) মেয়র প্রার্থী বললেন, এটা তাদের দলের নিজস্ব সমস্যা। ভেরী সেইম, দুর্ভাগ্যজনক। এরকম একজন ব্যক্তি যিনি এই কথা বলতে পারেন তা তো মেয়র হওয়ার কোনো যোগ্যতাই থাকতে পারে না। বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় তাকে দুই বছর আটকিয়ে রাখা হয়েছে। যে জামিন তিনি পাওয়ার যোগ্য, যেটা আমার সংবিধানের মধ্যে আছে সেই জামিনও তাকে দেয়া হচ্ছে না, শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে। নাজমুল হুদা জামিন পেয়েছেন, মহিউদ্দীন খান আলমগীর জামিন পেয়েছেন, মায়া সাহেব(মোফাজ্জল হোসেন মায়া) জামিন পেয়েছেন। এরকম অনেকে জামিন পেয়েছেন। অথচ দেশনেত্রীকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় তার সুচিকিৎসা দরকার, তারপরও বিচার বিভাগ জামিন দিচ্ছে না। সম্পূর্ণভাবে আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এজন্য বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণভাবে সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে। এ্যাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্য পরিষদের সেলিম ভুঁইয়া বক্তব্য রাখেন। এছাড়া বিএনপির হাবিবুর রহমান হাবিব, অধ্যাপক মামুন আহমেদ, এবিএম মোশাররফ হোসেন, জহির উদ্দিন স্বপন, শাম্মী আখতার, আশরাফউদ্দিন বকুল, নেওয়াজ হালিমা আরলী, কাদের গনি চৌধুরী, শামীমুর রহমান শামীম, জেবা খান, হাসান জাফির তুহিন, রফিকুল ইসলাম, আবদুল হালিম মিঞা, ডা. আবদুস সেলিম, শায়রুল কবির খান, প্রকৌশলী মাহমুদ হোসেন, মিয়া মো. কাইয়ুম, এ্যাবের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আলমগীর হাছিন আহমেদ, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার কুটনীতিরা উপস্থিত ছিলেন।