যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানরা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি পুলিশী হয়রানির শিকার
ধর্মীয় কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমানরা অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি পুলিশী হয়রানির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে মুসলিম প্রাপ্তবয়স্ক যারা কালো, মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা, আরব বা উত্তর আফ্রিকান তারা বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এমনকি শ্বেতাঙ্গ মুসলিমদের তুলনায়ও তাদেরকে বেশি হয়রানি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সোসাইটি ফর দ্য স্টাডি অফ সোশ্যাল প্রবলেমে এ সমীক্ষা প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের গড়ে ৩.৮ শতাংশ এ অভিযোগ করলেও মুসলমানদের ক্ষেত্রে তা প্রায় পাঁচ গুণ বেশি হওয়ার তথ্য উঠে এসেছে।
এ তথ্যটি ২০১৯ সালে করা এক্সপেরিয়েন্স উইথ রিলিজিয়াস ডিসক্রিমিনেশন স্টাডির (ইআরডিএস) সমীক্ষা থেকে এসেছে। ধর্মের কারণে আন্তঃব্যক্তিক শত্রুতা, বৈষম্য ও ধর্মীয় কারণে ক্ষতির শিকার ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতা যাচাই করা হয় ওই সমীক্ষায়।
তথ্যে আরো উঠে এসেছে, মুসলিম সম্প্রদায় ও পুলিশের মধ্যে সম্পর্ক সবসময়ই উত্তেজনাকর। এমনকি কোনো হয়রানি থেকে বাঁচতে মুসলমানরা পুলিশী সহায়তা চাইলেও নাইন-ইলেভেনের ঘটনায় মুসলিমানদের প্রতি পুলিশী নজরদারীর কারণে বাহিনীটির প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না মুসলমানরা।
গত জুলাইয়ে আরব আমেরিকান অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (এএএএন) তথ্যের স্বাধীনতা আইনে আনা ২৩৫টি ‘সন্দেহজনক কার্যকলাপ প্রতিবেদন’ (এসএআর) পেয়েছে।
শিকাগো পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ও ইলিনয় স্টেট পুলিশ ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে রিপোর্টটি তৈরি করেছে।
রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে এসেছে, নাইন-ইলেভেন পরবর্তী ভূ-রাজনৈতিক পরিবেশ পুলিশ ও মুসলিম আমেরিকান সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। অনেক মুসলিম আমেরিকান অনলাইন ট্র্যাকিং, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা, নিয়মিত যাতায়াত বা ধর্মীয় স্থানগুলোতে রাষ্ট্র-অনুমোদিত পুলিশী নজরদারীর ভয়ে আছেন।
মিনা-গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত মুসলিমরা বিশেষভাবে জানিয়েছেন, তারা সবচেয়ে বেশি ধর্মভিত্তিক পুলিশী হয়রানির শিকার হয়েছেন। তাদের প্রায় ৩৫ শতাংশ এ হয়রানির শিকার হয়েছেন, যা সার্বিক গড়ের প্রায় ১০ গুণ।
তবে শ্বেতাঙ্গ মুসলিমদের কাছ থেকে ধর্মীয় কারণে পুলিশী হয়রানির অভিযোগ পাওয়া যায়নি বললেই চলে। কালো মুসলিমদের ২৩ শতাংশের বেশির হয়রানির অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ হার বর্ণগতভাবে বিশেষ করে মিনা-গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে তা প্রায় ৪০ শতাংশ।
এ গবেষণার প্রধান গবেষক ও রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের পিএইচডি ছাত্র জওহারা ফার্গুসন বলেন,
‘আমরা বিশ্বাস করি এটি অন্বেষণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এবং এটি পুলিশি হয়রানির অভিজ্ঞতায় ধর্ম এবং বর্ণের মধ্যে সংযোগগুলো বুঝতে আমাদের সাহায্য করতে পারে।’
সূত্র : মিডলইস্ট আই