গণমাধ্যম বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি জানিয়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেছেন, প্রতিনিয়ত সাংবাদিক নির্যাতন-হত্যা বেড়েই চলছে। কোনো ঘটনারই সুষ্ঠু বিচার হচ্ছে না। দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হলেও সাগর-রুনীসহ কোনো সাংবাদিক হত্যার বিচার আজ পর্যন্ত হয়নি। আমরা অবিলম্বে গণমাধ্যম বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল ও সাংবাদিক হত্যা নির্যাতনের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
সোমবার দুপুরে সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন বন্ধ, সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল ও বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন- ডিইউজের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সরকারের উদ্দেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, তেল-গ্যাস ও সকল দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ এখন দিশেহারা। তেল-গ্যাসসহ সকল নিত্যপণ্যের মূল্য অবিলম্বে সাধারণ জনগণের ক্রয়সীমার মধ্যে নিয়ে আসুন।
তারা বলেন, সাংবাদিক হত্যা নির্যাতন বন্ধ করুন। অবিলম্বে সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার করুন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল করে বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন। তা নাহলে সাংবাদিক সমাজ বসে থাকবে না। দাবি আদায়ের জন্য সাংবাদিক সমাজ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, এই সরকার সাংবাদিকদের খুন-গুম-নির্যাতন চালাচ্ছে। আমাদেরকেও কারাগারে নেয়া হয়েছিল। এখন পর্যন্ত কোনো মামলা প্রত্যাহার করা হয়নি।
তিনি বলেন, সরকারের দুর্নীতি ও অনিয়মে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ। হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন এই সরকারের পতন ছাড়া দেশের মানুষের মুক্তি নাই। তাই বিরোধী দলগুলোকে বলবো এখন আর সভা-সমাবেশ নয়, দুর্বার আন্দোলন করে সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করতে হবে।
ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সরকারের অপশাসনের কারণে বাংলাদেশ বসাবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নাই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার ও ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশকে সরকার ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। অর্থের অভাবে প্রান্তিক মানুষ সন্তান পর্যন্ত বিক্রি করে দিচ্ছে।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বলেন, অবিলম্বে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। সকল কালাকানুন বাতিল করে সকল গণমাধ্যম খুলে দিতে হবে। তা নাহলে সাংবাদিক সমাজ রাজপথে দুর্বার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী’র সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বিএফইউজে’র সিনিয়র সহ- সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিআরইউ-এর সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশীদ আলম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক নুরুল হাসান খান, ডিইউজের সিনিয়র সদস্য কায়কোবাদ মিলন, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি একেএম মোহসিন, জাতীয় প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য শাহনাজ পলি, ডিইউজের দফতর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, নির্বাহী সদস্য শহিদুল ইসলাম, মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শাখওয়াত ইবনে মঈন, ইকবাল মজুমদার তৌহিদ প্রমুখ।