ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন: জমির লোভে বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছেলে
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বাবাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে কচুরিপানার নিচে লাশ লুকিয়ে রাখার একটি ক্লু-লেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ বুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সোমবার প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি জানায় পিবিআই।
জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলার দেওভোগ দক্ষিণপাড়া এলাকার হযরত আলীকে তার ছেলে জাহাঙ্গীর মোল্লা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা পর ভাগ্নে আসিফের সহায়তায় পুকুরে কচুরিপানার নিচে লাশ লুকিয়ে রাখে। এ ঘটনায় গ্রেফতারের পর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আসিফ।
টাঙ্গাইলের কোর্ট পরিদর্শক তানবীর আহাম্মেদ বলেন, আসিফ আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। মির্জাপুর আমলী আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদল কুমার চন্দ্র তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাকে টাঙ্গাইল জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
পিবিআই জানায়, ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে হযরত আলী তার ছেলে জাহাঙ্গীর ও নাতি আসিফকে নিয়ে কমুলির বিলে নিজেদের পুকুরে মাছ ধরতে যান। সেখান থেকেই নিখোঁজ হন হযরত আলী। আট দিন পর ৩ মার্চ সকালে ওই পুকুর থেকে হযরত আলীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় হযরত আলীর আরেক ছেলে সুজন মোল্লা অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন। পরে মামলার তদন্তভার দেয়া হয় পিবিআই-এর ওপর। তারা তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসিফকে গ্রেফতার করে। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে জাহাঙ্গীর মোল্লাকে মির্জাপুর থানা পুলিশ কয়েক মাস আগেই গ্রেফতার করে। তিনি এখন জেলহাজতে রয়েছেন। তবে তিনি এত দিন ঘটনা স্বীকার করেননি।
জমির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে হযরত আলীর সাথে তার ছেলে জাহাঙ্গীর মোল্লার বিরোধ চলছিল।
গ্রেফতারের পর ভাগ্নে আসিফ নিজের দোষ স্বীকার করে জানায়, ঘটনার রাতে তারা তিনজন মাছ ধরতে যায়। জাহাঙ্গীর পিছন থেকে হযরত আলীকে লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তিনি মারা যান। তখন জাহাঙ্গীর হত্যার বিষয়ে কাউকে কিছু বলতে আসিফকে নিষেধ করেন এবং লাশ গুম করার জন্য তাকে সহযোগিতা করতে বলেন। সহযোগিতা না করলে তাকেও হত্যার হুমকি দেন জাহাঙ্গীর।
পরে আসিফ ও তার মামা জাহাঙ্গীর মিলে হযরত আলীর লাশ পুকুরের একপাশে কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখে। একইসাথে মাটিতে লেগে থাকা রক্ত পানি ও কাদা দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে তারা বাড়ি চলে যান।