‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে’
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় স্বামীর বাড়ি থেকে লামিয়া আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের স্বজনদের দাবি মেয়েকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
শুক্রবার (০১ জুলাই) বিকেলে উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রাম থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ।
নিহত লামিয়া আক্তার বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর এলাকার মো. শহিদুল ইসলাম খানের মেয়ে।
লামিয়া আক্তারের স্বজনরা জানান, দুই বছর আগে লামিয়ার সঙ্গে বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের আউলিয়াপুর গ্রামের দোলন খানের ছেলে মিজানুর রহমান খানের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কয়েক মাস তাদের সংসার ভালোই চলে। কিন্তু এরপর থেকে স্বামী মিজানুর কারণে অকারণে লামিয়ার ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। কয়েক মাস ধরে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিলো।
লামিয়া প্রায়ই ফোন দিয়ে বাবা-মাকে নির্যাতনের কথা বলতেন। বাবা-মা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তাকে ধৈর্য ধরতে বলতেন। শুক্রবার দুপুরে মিজানুরের বাড়ি থেকে খবর আসে লামিয়া বাসার সিলিং ফ্যানে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
লামিয়া আক্তারের বাবা মো. শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি। তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। মিজানুর তাকে হত্যা করেছে বলে আমার ধারণা। আমি এ ঘটনায় তার গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছি।
তবে লামিয়া আক্তারের স্বামী মিজানুর রহমান জানান, বেলা ১১টার দিকে লামিয়া রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। এ সময় আমি লামিয়াকে মাটির চুলায় রান্না করতে বলি। এ নিয়ে আমাদের দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে আমি বাড়ি থেকে বাইরে চলে যাই। দুপুর ১টার দিকে বাড়িতে ফিরে শোয়ার ঘরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে লামিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাই। পরে পুলিশকে খবর দিলে তারা মরদেহ নামিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। লামিয়াকে নির্যাতনের অভিযোগ সত্য নয়।
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন মিলন জানান, খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। লামিয়া আক্তারের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। তবে হত্যা না আত্মহত্যা তা এখনই বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।