বিয়ানীবাজারে বন্যায় বাড়ছে প্রাণহানি, লাশ মিলছে বন্যপ্রাণীরও

0

বাড়ির আঙ্গিনা থেকে গতকাল শনিবার বিকালে নিখোঁজ হন স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের বৃদ্ধা মা দিলওয়ারা বেগম (৯০)। রোববার সকালে পাশের সোনাই নদী থেকে তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মানুষ ছাড়াও গরু, শেয়াল ইত্যাদিরও প্রাণহানি ঘটছে।

বৃদ্ধা দিলওয়ারা নিখোঁজের পর অনেক খোঁজাখুঁজির করে না পেয়ে স্বজনদের ধারণা হয়, উঠানের গা ঘেঁষে বয়ে যাওয়া সোনাই নদীতে হয়তো তিনি তলিয়ে গেছেন।

সারা রাত নদীতে নৌকা দিয়ে খোঁজ করেও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি তার। অবশেষে রোববার সকাল ৭টার দিকে বৃদ্ধার লাশ পাওয়ায় যায় কয়েক কিলোমিটার ভাটিতে সোনাই নদীর তিলপারা ইউনিয়নের শানেশ্বর এলাকার।

বন্যায় ভেসে যাওয়া দিলওয়ারা বেগম বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা ইউনিয়নের টিকরপারা এলাকার শ্রীপুরের বাসিন্দা। তিনি ইউপি সদস্য ইসলাম উদ্দিনের মা। শনিবার নিখোঁজের পর আশাপাশ এলাকায় মাইকে তার হারিয়ে যাওয়ার খবর প্রচার করা হয়েছিল।

রোববার সকাল নদীতে মাছ ধরার সময় জেলেরা ভাসমান লাশ দেখে ইউপি সদস্য ইসলাম উদ্দিনকে খবর দেন। খবর পেয়ে লাউতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, ছেলে ইসলাম উদ্দিনসহ স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ সনাক্ত করেন এবং বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করেন।

ইসলাম উদ্দিন বলেন, বাড়ির চারপাশে বন্যার পানি। ঘর থেকে বের হয়ে অসাবধানতাবশতঃ হয়তো সোনাই নদীতে পড়ে যান তিনি। নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় পরিবারের কেউ টের পায়নি। সকালে জেলেরা ভাসমান লাশের খবর দেয়।

লাউতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, লাশ উদ্ধারের পর ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের অনুমতি নিয়ে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মেম্বারের মা নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে শনিবার বিকাল থেকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। রাতে নদীতে জাল ফেলা হয়েছিলো। কিন্তু নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় বার বার উদ্ধার কাজে ব্যাঘাত ঘটে।

এর আগে গত ২৩ জুন বৃহস্পতিবার ভোরে পানিবন্দী ঘর থেকে এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরিবারে অন্য সদস্যরা স্থানীয় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকলেও রাতে তিনি ঘর ও আসবাপত্র দেখতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। পরদিন সকালে তার লাশ ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়।

এদিকে গত শনিবার দিবাগত রাতে পৌরসভার ফতেপুর এলাকায় বিয়ানীবাজার পৌরসভার বৈদ্যুতিক তারের সংস্পর্শে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে দুটি গরু মারা যায়।

কানাইঘাট উপজেলার সড়কের বাজারহাট থেকে গরু দুটি কিনে পানির কারণে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। স্ট্রিট লাইটের খুঁটি থেকে রাস্তার পানি বিদ্যুৎতায়িত হলে তার সংস্পর্শে গরু দুটি মারা যায়।

এ সময় অল্পের জন্য রক্ষা পান গরুর সাথে থাকা দুই শ্রমিক। এছাড়া পৌরসভাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎতায়িত হয়ে শিয়ালসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণী মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিকনূর জানান, বিয়ানীবাজার উপজেলাজুড়ে পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। আরো আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা আছে। বন্যাদুর্গতরা এখানে এসে যেকোনো সময় আশ্রয় নিতে পারেন। আমরা দুর্গত এলাকায় যাচ্ছি। ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি আমরা মানুষকে সচেতন করারও চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com