যমুনার ভাঙ্গনে হুমকির মুখে শিবালয়ের দুইশ’ পরিবার

0
এবার বর্ষা শুরু থেকেই শিবালয়ের যমুনার  পাড় এলাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে আরিচা ঘাট সংলগ্ন দক্ষিণ শিবালয়ের দুইশ’ পরিবার। ইতিমধ্যে ওই গ্রামের নদীর পাড় এলাকার বেশ কিছু অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পানি বাড়া এবং কমার সময় ভাঙ্গনের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। আগে থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এসব পরিবাবরের বাড়ি ঘরের সম্পুণূ অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
ইতিমধ্যে নদী ভাঙ্গন রোধে ভুক্তভোগী গ্রামবাসী এবং ৩ নং শিবালয় মডেল ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ,এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের নিকট লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে,  মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলার দক্ষিণ শিবালয় গ্রামের নদী পারের প্রায় সাড়ে তিনশ’ ফুট এলাকার বাড়ি-ঘর এবং ফসলি জমি এমনিতেই বিগত বর্ষা থেকেই তীব্র নদী ভাঙ্গনে হুমকির মুখে রয়েছে। গত বর্ষায় এ তিনটি গ্রামের নদীর পার এলাকায় বিশাল পাড়ালের সৃষ্টি হয়ে ভয়াবহ অবস্থায় আছে। ফলে গ্রামবাসীরা এখন অনেকটা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। এবার বর্ষা শুরু হবার আগে থেকেই ভাঙ্গতে শুরু করেছে। ভুক্তভোগীরা নিজ উদ্যোগে বাঁশ ও বন দিয়ে ভাঙ্গন রোধের সৃষ্টা করছে।
ভাঙ্গন কবলিত এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে , শুস্ক মৌসুমে নদীর পার এলাকায় ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটা এবং ভাঙ্গন কবলিত এলাকার অদূরে পশ্চিমে ও উত্তরে নদী মাঝে চর পড়ায় পানির স্রোতে  এ গ্রামের  নিকটবর্তী এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় এ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আরিচা ঘাট থেকে নদীর পার দিয়ে দক্ষিণ শিবালয়ের যে রয়েছে রাস্তাটি তার অর্ধেক অংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। দক্ষিণ শিবালয়ের একটি পাকা কবর নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। শিবালয়ের যমুনার পারে অবস্থিত দক্ষিণ শিবালয় জামে মসজিদ, আরিচা পিসিপোল কারখানা, কাশাদহ সেচ প্রকল্পের পানির পাম্প হাউজ মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙ্গন রোধ করা না হলে এসব স্থাপনা যে কোন সময় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
নদীর পার এলাকা দীর্ঘ দিন ধরে প্রতি বছরই সীমিত আকারে ভাঙ্গে। কিন্তু গত বছর থেকে এ এলাকায় নদী ভাঙ্গন সর্বকালের ভয়াবহন রূপ ধারন করেছে। বর্ষায় পানি বাড়ার সময় যেভাবে নদী ভাঙ্গন শুরু হয় তা বিগত ৫০ বছরেও এরকম ভাঙ্গন দেখা যায়নি। নদী ভাঙ্গনের কারণে এ এলাকার লোকজন এখন আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছেন। নদীর পাড় এলাকা দিয়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং নদী শাসন করলে হয়তো নদী ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হবে। তা না হলে পূর্ব পুরুষের ভিটাবাড়ি, জায়গা জমি সব নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। অবশেষে গৃহহীন হয়ে রাস্তায় আশ্রয় নিয়ে বসবাস করতে হবে। এমতাবস্থায় আরিচা ঘাট সংলগ্ন নিহালপুর এলাকা হতে পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত নদী ভাঙ্গন রোধে জরুরী ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মান ও নদী শাসনের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নদী ভাঙ্গন রোধে ভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসী এবং শিবালয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য মানিকগঞ্জ-১ এবং পানি বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর  বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
দক্ষিণ শিবালয় গ্রামের মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, নদীর মাঝে চর পড়ার কারণে পানির স্রোতে পাড় এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় আমাদের এ গ্রামটিতে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ও কবর ও আবাদি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে দক্ষিণ শিবালয় গ্রাম ও এর আশপাশের এলাকার গুরুত্বপূর্ণ অনেক স্থাপনাগুলো নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। মানিকগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এ,এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের কাছে আমাদের আবেদন অতি দ্রুত এই ভাঙ্গন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
স্থানীয় আবুল হোসেন বলেন, আমার প্রায় ৬৫ বছর বয়স। এ বয়সে ছোট  আকারে অনেক ভাঙ্গন দেখেছি। কিন্তুু এবারের মতো ভয়ংকর ভাঙ্গন বিগত ৫০বছরেও  দেখিনি।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, শিবালয়ের নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে আমরা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পারমিশন পেলেই কাজ শুরু করবো।
তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com