কোরবানির আগেই অস্থির হয়ে উঠছে নিত্যপণ্যের বাজার

0

কোরবানি ঈদের আগেই অস্থির হয়ে উঠছে নিত্যপণ্যের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি আলু ও পেঁয়াজে বেড়ে গেছে ৫ ও ১০ টাকা। এছাড়া সব ধরনের সবজিতেই বেড়েছে ১০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে গেছে সব ধরনের সবজির দাম। বন্যার প্রভাব এবং সরবরাহে ঘাটতি থাকায় দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।
বন্যার পানি না কমলে এসব সবজির দাম কমবে না এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন তারা। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ব্যবাসায়ীদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ ৪০ টাকা করে বিক্রি হলেও এখন তা কেজিপ্রতি ৫০ টাকা। আলুর দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া বেগুন ৫০ থেকে বেড়ে ৬০, টমেটো ১২০ থেকে বেড়ে ১৫০, চিচিঙ্গা ৪০ থেকে বেড়ে ৫০, আদা ৭০ থেকে বেড়ে ৯০, ঝিঙ্গা ৪৫ থেকে বেড়ে ৫৫ ও শসা ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য সবজির দামও বেশি। অপরিবর্তিত রয়েছে ডিমের দাম। বর্তমানে মুরগির ডিম ১২০ টাকা ডজন আর হাঁসের ডিম ১৬৫ টাকা ডজন।

বাসাবোর সবজি ব্যবসায়ী আরিফ বলেন, গত কয়েক দিন ধরেই সবজির দাম বাড়ছে। উত্তরবঙ্গ ও সিলেট বিভাগে বন্যায় বহু ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে। কৃষকের অনেক ফসলও নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া বন্যায় যান চলাচলও কিছুটা ব্যাহত ছিল, যার কারণে সবজির দাম বাড়ছে লাফিয়ে। কাঁচা সবজি, মাছ ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলে আগের তুলনায় বেচাকেনা কমে গেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যায় অনেক সবজি নষ্ট হয়েছে। চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। বাজারে সব ধরনের সবজিতে কেজিপ্রতি ১০ টাকা করে বেড়েছে।

গোশতের বাজার ঘুরে দেখা যায়, খাসির গোশত কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে। আগে ৮০০-৮৫০ টাকা থাকলেও ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। মুরগির বাজার গত সপ্তাহের মতোই আছে। তবে বন্যার কারণে হয়তো দাম বাড়তে পারে। গতকাল বাজারে ব্রয়লার ১৫০ টাকা, সোনালি ২৮০ টাকা ও পাকিস্তানি কক ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় রুই কেজিপ্রতি ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছোট কাতল ৩০০ হলেও বড় কাতল ৩৫০-৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩ শ’-১৪ শ’ টাকা, বড় সাইজের বোয়াল ৬০০-৭০০ ও ছোট সাইজের বোয়াল ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া ছোট পাবদা ৩৫০ আর বড় পাবদা ৫৫০-৬০০, পাঙ্গাশ ১৮০-২২০, আইড় ছোট ৩৫০ আর বড় ৬০০-৭০০ টাকা, টাটকিনি ১৫০, সরপুঁটি ২০০, সামুদ্রিক কোরাল ৪০০, রুপচাঁদা ৬০০, সিলভার কার্প ২০০, চাষের শিং ৩৫০-৪০০, কৈ ১৮০-২০০, শোল ৭০০-৮০০ ও দেশী মাগুর ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারি বাজারে মিনিকেট, বিআর ও নাজিরশাইলের দাম কমেছে। যার প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে এসব চাল কেজিতে দুই-তিন টাকা কমে মিনিকেট ৬৬-৬৮ টাকা, বিআর ৫৩-৫৫ টাকা, নাজিরশাইল ৭৫-৭৮ টাকায় কিনছেন ক্রেতারা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই-তিন দিন আগে চালের দাম কিছুটা কমেছে। বর্তমানে চালের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। চার দিকে বন্যা চললেও পরিস্থিতি আগের থেকেও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে চালের দাম যেন আর না বাড়ে সেটাই আমরা চাই।
এ দিকে মুদিপণ্যের মধ্যে গত সপ্তাহের তুলনায় ডালের দামও অনেকটা কমেছে। গত সপ্তাহের ১৪০ টাকায় বিক্রি করা মসুর ডাল চলতি সপ্তাহে ১৩০ টাকা, দেশী মসুর ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত দামেই বুটের ডাল ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা।

 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com