ঢাবি আ.লীগ-ছাত্রলীগের প্রমোশন জোনে পরিণত হয়েছে: রিজভী

0
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেন এক্সপোর্ট প্রমোশন জোনের মতো আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের প্রমোশন জোনে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘গত ১৮ জুন শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে ইউট্যাব এর একটি ঘরোয়া দাওয়াতে আমি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ও তিনজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলাম। আমন্ত্রিত অতিথি সহ সব মিলিয়ে ১০ থেকে ১২ জন উপস্থিত ছিলেন। এখানে যদি নাশকতার কোন পরিকল্পনা করা হতো, তাহলে সিসিটিভি’র ক্যামেরার আওতার মধ্যে কিভাবে আমরা ডাইনিং কক্ষে গিয়ে বসলাম। সেখানে অনেকেই সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন। এটিকেই এখন ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং তাদের দলদাস কিছু শিক্ষক।’
বুধবার (২২ জুন) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন,‘বিভিন্ন সংগঠনের নামে এখন তারা ষড়যন্ত্রের নামে আমাদের বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচি দিয়ে আমি সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ওবায়েদকে গ্রেফতারের জন্য দাবি জানাচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের দলদাস প্রশাসন ড. ওবায়েদকে নানাভাবে হয়রানী করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেন এক্সপোর্ট প্রমোশন জোনের মতো আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের প্রমোশন জোনে পরিণত হয়েছে। আর এদের ছত্রছায়া দিচ্ছে দলদাস বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন,‘আসলে এক দেশে দুই আইন। ক্লাবসহ ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় চত্তর আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের অভয়ারণ্য। অনেক রাত পর্যন্ত তারা ক্লাবে আড্ডা দেয় এবং লনটেনিস খেলা সহ নানাবিধ কর্মকাণ্ড চালায়। তাদের জন্য সাত খুন মাফ। অথচ কোন শিক্ষকের আমন্ত্রণে বিরোধী দলের কোন নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু সময়ের জন্য সেখানে অবস্থান করলেই তারা সেখানে নাশকতার গন্ধ পায়। এমনকি অন্য দেশের অনেক শিক্ষক-বুদ্ধিজীবিকে অহরহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেটিতে অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অগোচরে ব্যক্তিগত বা বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারা দিব্যি সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাপিয়ে বেড়ায়।’
রিজভী বলেন, ‘মূলত: রাষ্ট্র বিরোধী দলের ওপর অত্যাচার করছে বা প্রতিশোধ নিচ্ছে। সরকার তাদের সমালোচনাকারীদের কড়া নজরদারীর মধ্যে রেখেছে। এখন বাংলাদেশের মানুষের দেহ ও মন সার্বক্ষণিক নজরদারীর মধ্যে। এ সমস্ত ষড়যন্ত্র তত্ত্ব মূলত: দমনমূলক তত্ত্ব। পদ্মা সেতু নিয়ে সরকার যত সমালোচনার মুখে পড়েছে সেটিকে আড়াল করতেই তারা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব সাজিয়েছে। এই সেতু নিয়ে দুর্নীতি পাগলা ঘোড়ার মতো বেসামাল হয়ে পড়েছে। মানুষের সমালোচনাকে বাকরুদ্ধ করার জন্যই দমননীতি কার্যকর করা হচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন,‘শেখ হাসিনা আসলেই আমাদের সমাজের অভ্যন্তরে অঘোষিত যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার ক্ষমতা অজেয় ও তার কর্তৃত্ব অনতিক্রম্য। কয়েক দিন আগে শেখ হাসিনা আরও বেশি ক্ষমতা চান বলে জানিয়েছেন। এই মনোবৃত্তি হিটলার-মুসোলিনী’র মতো। এখনই শেখ হাসিনার যে ক্ষমতা তাতে গণতন্ত্র, নির্বাচন, বাক-স্বাধীনতা দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার ধারে ফেলে দেয়া হয়েছে। এরপর আরও বেশি ক্ষমতা অধিকারী হলে শেখ হাসিনা দেশটাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাবে তা চিন্তা করতেও গা শিউরে ওঠে। আর্তনাদ আর হাহাকারে দেশটা ভরে উঠবে। শুরু হবে অন্ধকার প্রতিক্রিয়া ও দাসত্বের বাতাবরণ। শেখ হাসিনা আরও বেশি ক্ষমতার অধিকারী হলে জনগণের বিবেক ও চিন্তারস্বাধীনতা এবং আলো ও অগ্রগতি চিরতরে ধুলিস্যাৎ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন,‘পদ্মা সেতুর দুর্নীতি এবং সিলেট সহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বন্যা মোকাবেলায় ব্যর্থতা, প্রচণ্ড মূদ্রাস্ফীতির কারণে দ্রব্যমূল্য হু হু করে বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে সরকার বিরোধী দলের সমালোচনাকে দমন করার লক্ষ্যে দলবাজ কিছু শিক্ষক ও মিডিয়ায় নাশকতার অপপ্রচারের ধুম্রজাল সৃষ্টি করে সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবে আমাদের উপস্থিতিকে নিয়ে নাটক শুরু করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেন  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়াকে কেন্দ্র করে যে নাটক করা হচ্ছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, খাইরুল কবির খোকন, মীর সরফত আলী সপু,শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com