স্কুলছাত্র ও তার মাকে জুতাপেটা করলেন লাইব্রেরিয়ান!
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় বিদ্যালয়ের ভেতরে এক ছাত্র ও তার মাকে জুতাপেটা করার অভিযোগ উঠেছে লাইব্রেরিয়ানের বিরুদ্ধে।
বিদ্যালয়ের গাছ থেকে একটি আম পাড়ার কারণে প্রথমে ওই ছাত্রকে মারধর করা হয়। তাকে রক্ষায় তার মা এগিয়ে গেলে তিনিও জুতাপেটার শিকার হন।
গত ২১ মে উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের পালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। তবে বুধবার সন্ধ্যার পর ওই জুতাপেটার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ছাত্র ওই বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, স্কুলমাঠে বেশকিছু ছাত্র-ছাত্রী দাঁড়িয়ে। আম পাড়ার বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা চলছে। এর মধ্যেই এক ব্যক্তি পায়ের জুতা খুলে এক ছাত্রের কাছে দ্রুত গিয়ে পেটাতে শুরু করেন। ঘটনাস্থলে ওই ছাত্রের মা ছিলেন। তিনি ছেলেকে রক্ষার চেষ্টা করলে জুতার আঘাত পড়ে তার শরীরেও।
ভিডিওতে পায়ের জুতা খুলে যাকে মারধর করতে দেখা যাচ্ছে তিনি ওই বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান মো. কামরুজ্জামান বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আসাদুল আলম।
তিনি বলেন, ‘ছেলেরা স্কুলের গাছের আমগুলো পেড়ে শেষ করে দিচ্ছিল। স্কুলের শিক্ষকরা তাদের বারণ করলে তারা শিক্ষকদের সঙ্গেই দুর্ব্যবহার করে। এরই একপর্যায়ে লাইব্রেরিয়ান কামরুজ্জামান জুতা খুলে মারধর করেছেন। তবে ঘটনার সময় আমি ছিলাম না।’
স্কুলের ভেতরেই প্রকাশ্যে শিক্ষার্থী ও তার মাকে জুতাপেটা করার ঘটনায় এলাকায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তবে অভিযুক্ত লাইব্রেরিয়ানের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জানা গেছে, ঘটনার পর স্কুলের প্রধান শিক্ষক ওই শিক্ষার্থী ও তার অভিভাবককে স্কুলে ডাকেন। তারা গেলে স্কুলটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি মীমাংসা করে দেন।
বিষয়টি স্বীকার করেছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আসাদুল আলম। তিনি বলেন, এ ছেলে এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। তাই মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।
লাইব্রেরিয়ান কামরুজ্জামান নিজের ভুল স্বীকার করে বলেছেন, তার অজান্তেই জুতা খোলা হয়ে গিয়েছিল। তাই তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। তবে এ ধরনের ঘটনা শোভনীয় নয়। তাই ভবিষ্যতের জন্য তাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জানে আলম বলেন, বুধবারই তিনি ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছেন। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করলে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দুলাল আলমকে ফোন করা হয়। তিনি বিষয়টি শুনেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।