মন্ত্রীর সঙ্গে ফটোসেশনের পর ফিরিয়ে নেওয়া হয় ত্রাণ!

0

ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছবি তুললেন মন্ত্রীর সঙ্গে কিন্তু মন্ত্রী চলে যাওয়ার পরই প্যাকেট নিয়ে নিলেন আয়োজকরা।অবশেষে শূন্য হাতে বাড়ি ফিরতে হয় কোম্পানীগঞ্জের মাহফুজকে।

গত সোমবার থেকে পরিবারসহ পানিবন্দি তিনি। ছিল খাবার পানির সংকটও। শনিবার মন্ত্রী আসছেন কোম্পানীগঞ্জে-এমন সংবাদে কিছুটা ভরসা পায় মাহফুজের পরিবার। আশায় বুক বেঁধে অবশেষে শনিবার ত্রাণের আশায় তিনি ছুটে আসেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরের সিএনজি স্টেশন পয়েন্টে। সকাল ১০টায় এ জায়গা থেকেই ৬টি ইউনিয়নের বন্যাদুর্গত ২০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ। এ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের আয়োজন করে কোম্পানিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।

স্থানীয়দের সঙ্গে পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে ত্রাণের তালিকায় যুক্ত হন মাহফুজ মিয়াও। ত্রাণ বিতরণের জন্য সবকিছু প্রস্তুত হলে মন্ত্রী আসেন বিতরণে। শুরু হয় ক্যামেরার ক্লিক। মন্ত্রীর সামনে প্যাকেট হাতে নিয়ে ছবি তোলা হলো কয়েকজন ত্রাণগ্রহীতার। ব্যাস! বিপত্তি বাধে ফটোসেশন শেষে মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর। যারা ত্রাণের প্যাকেট হাতে ছবি তুলেছেন, ডাকা হয় তাদের সবাইকে।

dhakapost
ত্রাণ না পেয়ে হতাশ শ্রমজীবী মানুষ

আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, মন্ত্রীমহোদয়কে তাড়াতাড়ি বিদায় দিতেই তোলা হয়েছিল ছবিগুলো। এখন প্যাকেটগুলো নিয়ে যাওয়া হবে। সবাইকে একসঙ্গে লাইনে দাঁড় করিয়ে ফের ছবি তুলে দেওয়া হবে ত্রাণ। মাহফুজ মিয়া নিজের প্যাকেট তুলে দিলেন আয়োজকদের হাতে।

এ সময় লাইনে ত্রাণের অপেক্ষায় হাজারখানেক মানুষ। আয়োজকরা জানালেন, মন্ত্রীর হাত দিয়ে বিতরণের জন্য ত্রাণের ১২০টি প্যাকেট তৈরি করা হয়। প্রতি প্যাকেটে রয়েছে ১০ কেজি চাল ও আনুষঙ্গিক কিছু জিনিস।

কথা রাখেননি আয়োজকরা। মাহফুজ মিয়া ফিরে পাননি ত্রাণের প্যাকেট। ১২০ প্যাকেট ত্রাণের জন্য উপস্থিত লোকজনের মধ্যে কাড়াকাড়ি শুরু হয়। গায়ের জোরে যারা পেরেছেন তারা প্যাকেটগুলো বাগিয়ে নেন। অব্যবস্থাপনা সামাল দিতে পুলিশ একপর্যায়ে বন্যাদুর্গতদের ওপর লাঠিচার্জ করে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়।

মাহফুজ মিয়ার বাড়ি উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। মাহফুজ মিয়া বলেন, বন্যার কারণে আমার কাজ বন্ধ। আমি দিনমজুর মানুষ। দিন আনি দিন খাই। তাছাড়া আমার ঘরের ভেতরে পানি। ত্রাণ নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ত্রাণের বস্তাসহ আমার ছবি উঠানো হলেও প্রশাসনের লোকজন আমার হাত থেকে তা কেড়ে নেয়। পুলিশের লাঠিচার্জে আহত হই।

dhakapost

মাহফুজ মিয়ার স্ত্রী হালিমা বলেন, ‘আমার স্বামী শ্রমজীবী। বন্যার কারণে কাজে যেতে পারেননি গত চার দিন। ঘরের ভেতরে পানি। আমার স্বামী পানি মাড়িয়ে সিএনজি পয়েন্টে গেলেও ফিরলেন খালি হাতে। আমাদের মতো আর কেউ যেন এ রকম হয়রানির শিকার না হন।’

dhakapost

 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com