উচ্চ শিক্ষিত হয়েও চাকরি পাচ্ছে না তরুণরা, বাড়ছে বেকার সংখ্যা
দেশের উচ্চ শিক্ষিত তরুণদের অভিযোগ চাকরি পাচ্ছেন না তারা। বিপরীতে চাকরিদাতারা বলছেন, যোগ্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাড়তি বেতন-ভাতা দিয়ে বিদেশ থেকে কর্মী আনতে হচ্ছে।
খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠান-বিআইডিএসের সমীক্ষা অনুযায়ী দেশের ৮টি খাতে শ্রমিকের অভাব রয়েছে প্রায় ১৭ লাখ।
গবেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় কর্মমুখী শিক্ষায় জোর দেয়ার সময় এসেছে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ অর্জন ও সরকারি চাকরি করার প্রবণতা দূর করতে হবে। মানসিকতার পরিবর্তন দরকার অভিভাবকদেরও।
দেশের প্রধান শিল্পখাতগুলোতে দক্ষ শ্রমিকের সঙ্কট ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। বিআইডিএস বলছে, ২০২৫ সাল নাগাদ ৯টি শিল্পখাতে ৮০ লাখ দক্ষ শ্রমিকের দরকার হবে। বর্তমানে ২০ শতাংশ দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতি নিয়েই চলছে তৈরি পোশাক খাত।
বিপরীতে প্রতিবছর উচ্চ ডিগ্রিধারী ২০-২২ লাখ তরুণ-তরুণী কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করলেও তাদের কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
শ্রমিকরা বলছেন, পড়ালেখা শেষ করে চাকরি হয়ে যাবে, কিন্তু হচ্ছে না। ব্যাংকে ভাইভা দিচ্ছি, ব্যাংক কীভাবে কাজ করবে এখানে তো রিস্ক আছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দক্ষ শ্রমিকের অভাবে ভারত, চীন, শ্রীলঙ্কা বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১০ লাখের মতো কর্মী বাংলাদেশে কাজ করছেন। যাদের বেতন-ভাতায় বছরে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৫-৬ বিলিয়ন ডলার। যেখানে বিদেশে কর্মরত প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি শ্রমিক বছরে ১৪-১৬ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠান। অথচ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কর্মমুখি শিক্ষায় ন্যূনতম মনোযোগ দিচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এফবিসিআই’র সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
তিনি বলেন, টেকনিক্যাল লেখাপড়া হওয়া উচিত। সেটা বলে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে চিঠিও দেয়া হয়। কিন্তু সেটা কেউ করেনি। এরপর প্রধানমন্ত্রীকে বললে তিনি আমাদের একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতে বলেন।
২০২৫ সাল দক্ষ জনশক্তি যোগান দিতে ৫৬ লাখ শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সরকারের পাশাপাশি এগিয়ে আসছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো।
ব্র্যাকের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচির বিভাগীয় প্রধান বলেন, পঞ্চাশ ভাগের মতো বাবা-মা মনেই করেন না তাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য টেকনিক্যাল বিষয়ে পাড়াশুনা করতে বলেন না।
প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষিত তরুণরা দক্ষতা অর্জন করলে বেকারত্ব যেমন ঘুচবে, ঘটবে অর্থনৈতিক উন্নয়নও। অন্যথায় বাংলাদেশ উভয় সঙ্কটে ভুগবে বলে সর্তক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।