কাদেরের সংবাদ সম্মেলনকে ‘নাটুকে পুথি পাঠ’ বললেন রিজভী

0

রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ এখন দুর্নীতি, লুটেরা, টাকা পাচারকারী মাফিয়া চক্রে পরিণত হয়েছে দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপি সম্পর্কে মিথ্যাচার করাই এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি। জনগণ বিশ্বাস করে, বর্তমানে আওয়ামী লীগের মূলনীতি টাকা পাচার আর দুর্নীতি।’

বুধবার (১৮মে) দুপুরে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সংবাদ সম্মেলনকে ‘নাটুকে পুথি পাঠ’ বললেন উল্লেখ করেন রিজভী।

বিএনপির এ নেতা বলেন, ওবায়দুল কাদের প্রতিদিন বাসায় বসে একটি ল্যাপটপ সামনে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের নামে নাটুকে ভঙ্গিতে পুথি পাঠ করেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব মিথ্যার মহারাজা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ঘুরেফিরে বিষয় একটাই-বিএনপির বিরুদ্ধে আজগুবি, অসংলগ্ন, কল্পিত সব মিথ্যাচার ও কুৎসা উদ্‌গিরণ করা।

আরও বলেন, গত রোববার দেখলাম ওবায়দুল কাদের সাহেব অভিযোগ করছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নাকি দেশের টাকা বিদেশে পাচারের তালিকার শীর্ষে। হঠাৎ করেই কেন এমন আজগুবি, উদ্ভট ও হাস্যকর অভিযোগ করলেন? এর কারণটা হলো, ১২ মে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের ঘরে বসে দেওয়া ভাষণে নিজেই স্বীকার করেন যে, আওয়ামী লীগের নেতারা কোটি-কোটি টাকা পাচার করেছে। তার দলে টাকা পাচারকারী, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজসহ অপকর্মের সঙ্গে যুক্তদের প্রাধান্য চলছে। আর যারা এই পাচারকারী-অপকর্মকারী তাদেরকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়া হবে না।

রিজভী বলেন, এই নিরেট সত্য মুখ ফসকে বেরিয়ে যাওয়ায় নিজ দলের টাকা পাচারকারী মাফিয়াদের সাঁড়াশি আক্রমণে ভড়কে গিয়ে তার দু’দিন পর ১৫ মে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের নিজের গদি রক্ষা আর পিঠ বাঁচাতে পরিস্থিতি ভিন্ন খাতে নিতে চিরাচরিত অভ্যাস অনুযায়ী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একেবারে ডাহা মিথ্যার রূপ কথা সাজিয়েছেন। যদিও মিথ্যাচার করা তার মজ্জাগত। এটি সংঘবদ্ধ, জঘন্য অপপ্রচারের অংশ। নিশিরাতের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তাদের নেতা-মন্ত্রীদের মূলমন্ত্র হলো, ‘মিথ্যা বলি, মিথ্যা বেচি, মিথ্যাই পুঁজি। ’ অতি চালাকি ও অতি লোভের কারণে তাদের মিথ্যার রাজনীতিকে পল্লবীত করতে হয়।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, পাঁচ দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির (জিএফআই) সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে পাচার হচ্ছে ৬৪ হাজার কোটি টাকা। প্রতি বছর দুর্নীতির অর্জিত অর্থ নির্বিঘ্নে পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ডসহ ১০টি দেশে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, পাচারকৃত টাকার পরিমাণ বিবেচনায় এশিয়ায় পাচারকারী দেশ হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। পাচারকারীদের তথ্যের অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আলাদাভাবে তিন সদস্য ও চার সদস্যর দুটি অনুসন্ধান দল গঠন করলেও তাদের কাজের অগ্রগতি নেই। কারণ এই পাচারকারীদের সবাই ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com