ভারতের কাছ থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা এখনো পাইনি: মির্জা ফখরুল

0

ফারাক্কা পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণের কারণে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল প্রায় মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, এর ফলে ওই এলাকায় পানিতে আর্সেনিকসহ নানাবিধ প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। এছাড়া তিস্তাসহ অন্যান্য নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বাংলাদেশ এখনও পায় নাই। এসব নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহারের কারণে বাংলাদেশে পানির সংকট যেমন তীব্র হচ্ছে, একইসঙ্গে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

আজ ‘ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ থেকে ৪২ বছর আগে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ডাকে সারাদেশ থেকে লাখো জনতা ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত গঙ্গা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের সংগ্রামে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিলে অংশ নেয়।

তিনি বলেন, জীববৈচিত্র ও পরিবেশগত মানকে বিবেচনা না করে এবং প্রাকৃতিক ও মানবিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে ভারতকে কয়েক দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালুর অনুমতি দেয়। কিন্তু ভারত সেই সুযোগ নিয়ে অব্যাহতভাবে আজ পর্যন্ত তা চালু রেখেছে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার এই অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে নির্লজ্জভাবে তা মেনে নিয়েছে। ফলে বাংলাদেশের জনগণ পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই বঞ্চনা ও দেশের প্রকৃতিক বিপর্যয়ে জনদুর্দশার আশংকায় প্রাজ্ঞ ও দূরদর্শী মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিল করে ভারত সরকারের নিকট প্রতিবাদ করেন। এভাবে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিকট বিষয়টি তুলে ধরেন। তখন থেকে ব্যাপক মানববিপর্যয় সৃষ্টিকারী ফারাক্কা বাঁধের বিষয়টি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোচিত হতে থাকে।

‘আজও ফারাক্কা দিবসের তাৎপর্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। আন্তর্জাতিক আইন-কানুন ও কনভেনশনের তোয়াক্কা না করে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবাহিত ৫৪টি অভিন্ন নদীতে একের পর এক বাঁধ নির্মাণে নদীর ধারাকে বাধাগ্রস্ত করে ভারত একতরফা নিজেদের অনুকূলে পানি প্রত্যাহারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হয়েছে। তিস্তাসহ অন্যান্য নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা বাংলাদেশ এখনও পায় নাই। এসব নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহারের কারণে বাংলাদেশে পানির সংকট যেমন তীব্র হচ্ছে, একইসঙ্গে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে সারা বাংলাদেশ একসময়ে নিষ্ফলা ঊষর ভূমি হয়ে উঠবে বলে দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যেই অভিমত প্রকাশ করেছেন।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ১৯৭৬ সালের ১৬ মে মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহী থেকে ফারাক্কা অভিমুখে ঐতিহাসিক মিছিলে ন্যায্য পাওনা আদায়ের সংগ্রামে জনগণ অকুতোভয় সাহসী পদক্ষেপে এগিয়ে গিয়েছিল।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com