আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচনে যাব না: গয়েশ্বর

0

দেশে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, নির্বাচনের জন্য বাধা হলো আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা তাদের অধীনে নির্বাচনে যাবো না। তবে যেনতেনভাবে আরেকটি নির্বাচন করতেও দেয়া হবে না। জনতার শক্তির কাছে কোনো শক্তি টিকতে পারবে না। আসুন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিন। আমরা জনগণকে বিশ্বাসযোগ্য আন্দোলন উপহার দিতে পারবো।

একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সময় থাকতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন। তাহলে বাংলাদেশের জনগণ শ্রীলংকার জনগণের মতো হবে না।

গতকাল শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলার মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) উদ্যোগে ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচন : সংকটের একমাত্র সমাধান’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

গয়েশ্বর বলেন, আমরা এখন ঐক্যের জন্য সংগ্রাম করছি। এরপর একটি লক্ষ্য আদায়ের জন্য হবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী চরিত্র সব বিরোধী রাজনৈতিক দলকে এককাতারে নিয়ে এসেছে। ফলে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা আর বেশি দূরে নয়। যেকোনো সময় সেটা জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে। সেইসাথে আগামী দিনের আন্দোলনের রূপরেখা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান তুলে ধরবেন। আমরা এবার প্রস্তুত।

তিনি বলেন, নির্বাচকালীন সরকারের নাম নিয়ে কী আসে যায়? আগে ঐকমত্য আসুন। তারপর নাম রাখা যাবে। কারণ সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে নাম পরেও রাখা যায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তি যখনই ঐক্য প্রতিষ্ঠা করবে তখনই ফ্যাসিস্ট ও লুটেরারা বিতাড়িত হবে। আজকে সরকার লুটপাট নিয়ে ব্যস্ত। সরকারের চারপাশে লুটেরা গোষ্ঠী রয়েছে। তারা অর্থনীতি ধ্বংস করেছে।

তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা শতভাগ শিক্ষিত দেশ। এক সময়ের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশ আজকে ধসে পড়লো। কারণ একটি সেখানকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর পরিবারের সদস্যরা লুটপাট করেছে। আমেরিকায় পাচারের অর্থ জব্দ করেছে। সেখানকার চেয়েও খারাপ অবস্থা বাংলাদেশে। যার সত্যতা মিলেছে ফরিদপুরে আওয়ামী লীগের জেলা সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে। শেখ হাসিনাকে ঘিরে লুটের সাম্রাজ্য বিস্তার লাভ করেছে। তারা মুদ্রা পাচার করছে। সুতরাং বাংলাদেশে কী ঘটবে সেটা বলা যায় না। আমরা চাই না শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি বাংলাদেশে আসুক। কিন্তু শেখ হাসিনা সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে সাবধান হোন।

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আজকে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না। দিনের ভোট রাতে কাটে। সুতরাং আমরা সব রাজনৈতিক দল যদি একসাথে বলি নির্বাচনে যাবো না– তাহলে নির্বাচন কমিশন আর ইভিএম নিয়ে কথা হবে না। আমরা অযথা সময় নষ্ট করছি কেনো? মানুষকে সাথে নিয়ে রাজপথে নামতে হবে। আমাদের নেতা তো খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান। খালেদা জিয়া বন্দী কিন্তু তারেক রহমান তো নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি ফ্যাসিবাদ থেকে বাংলাদেশ মুক্ত করতে চান।

তিনি বলেন, এই সরকার পদত্যাগ করলেই শুধু হবে না জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তা না হলে ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন হবে। সংসদ বহাল রেখে কিভাবে আরেকটি সংসদ নির্বাচন হয়?

গয়েশ্বর বলেন, আজকে সরকার শুধু মাথাপিছু আয়ের কথা বলে কিন্তু ঋণের কথা বলে না। বিদেশ থেকে যত টাকা ঋণ করেছে তার সুদের টাকা যোগান দেয়ার ক্ষমতা বাংলাদেশের নেই। ফলে আগামী দুই বছর পর চালের কেজি হবে ৩০০ টাকা। শ্রমিক পাওয়া যায় না। কাজের বুয়া পাওয়া যায় না। আজকে ট্যাক্স ও ভ্যাট বাড়িয়ে বাজারমূল্য ঊর্ধ্বমুখী করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা তো আন্দোলনে আছি। আন্দোলনের গতি হয়তো পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় বাড়বে বা কমবে। এটাই আন্দোলনের কৌশল। তবে আঘাত আসলে পাল্টা আঘাত। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে প্রতিশোধ নিতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশের পরিস্থিতি যা করেছে তাতে আমাদের লাগবে না। শেখ হাসিনার লোকেরাই তাকে কাঁঠালের মতো ছিঁড়ে খাবে। কারণ আওয়ামী লীগের লুটপাটের ভাগ তাদের দলের একটি অংশ পায়নি।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com