বড় মাপের সন্ত্রাসী হতে চেয়েছিলেন সেই ছাত্রলীগ নেতা
স্থানীয়ভাবে এলাকার মানুষের মধ্যে ভয় সৃষ্টি এবং আধিপত্য বিস্তারের জন্য সেই ছাত্রলীগ নেতা ফেসবুকে বিদেশি অস্ত্র হাতে ছবি দিয়েছিলেন। এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি নিজের কাছে পিস্তল রাখতেন।
তার মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে সকলে তার কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রের কথাটি সবাই জানে এবং তিনি নিজেকে বড় মাপের সন্ত্রাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন। এই ছিল অতি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিদেশি অস্ত্র হাতে ছবি ভাইরাল হওয়া পাবনার ছাত্রলীগ নেতা রাতুলের আদ্যোপান্ত।
ফেসবুকে বিদেশি অস্ত্র হাতে ছবি ভাইরাল হওয়া পাবনার সেই বিতর্কিত ছাত্রলীগ নেতা রাতুলকে রাজশাহী মহানগর এলাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে র্যাব-৫।
আটকের পর সোমবার (০৯ মে) বেলা ১১টার দিকে র্যাব-৫ এর সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিং করেন র্যাব-৫ অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান তালুকদার।
তিনি বলেন, পাবনায় ফেসবুকে বিদেশি অস্ত্র হাতে ছবি ভাইরাল হওয়া পাবনার রাতুলকে রাজশাহী থেকে আটক করা হয়েছে। রাতুলকে ধরার জন্য বেশ কয়েকদিন থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল র্যাব-৫। এরপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রোববার (৮ মে) রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন গ্র্যান্ড তোফা হল বিল্ডিং থেকে তাকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন সাগরপাড়া মহল্লার একটি পুরনো পরিত্যক্ত জমিদার বাড়ি থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান তালুকদার বলেন, রাতুলের সেই ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরই তিনি গা ঢাকা দেন। বিদেশি পিস্তল হাতে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করে আলোচনায় আসতে চেয়েছিলেন পাবনার আবু বক্কার সিদ্দিকী ওরফে রাতুল (৩০)। তার সেই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
রাতুলের বাড়ি পাবনার সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নের গাবগাছি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মোস্তফা কামালের ছেলে।
রাতুলের কয়েকটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছিল। এর একটিতে দেখা যায়, হাতে পিস্তল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন রাতুল। একটিতে দেখা যায় শুধু হাতের ওপর পিস্তল এবং অপরটিতে গুলিসহ আছেন রাতুল।
তবে গত বৃহস্পতিবার ছবিগুলো আলোচনায় আসে। যা গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়।
আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন যে, এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি নিজের কাছে সব সময় পিস্তল রাখতেন। তিনি পাবনায় বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলের পরিচয় ব্যবহার করে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। ফেসবুকে ছবি দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল যাতে সকলে তার কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রের কথাটি জানে এবং তিনি নিজেকে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ সে উপজেলার বিভিন্ন নেতার ছত্রছায়ায় থেকে ছাত্রলীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।