স্ত্রীর প্রেমে মন্ত্রী যখন অন্ধ
মন্ত্রীর দাপট সারাদেশে। আর মন্ত্রীর স্ত্রীর দাপট ঘরে। মন্ত্রীর উপর। স্ত্রী বললেন, তাই এ কাজ করতেই হবে। দুদিন ধরে আলোচনা তাই রেলমন্ত্রীকে ঘিরে। স্ত্রীর ভাগনে রেলে চড়বেন। এতে আবার টিকিট কিসের? পুরো রেলই তো মন্ত্রীর। বোকা টিটিই শফিকুল এটা বুঝলেন না। কত বড় সাহস? জরিমানা তো করেছেনই আবার এসি কোচ থেকে বের করে দিয়েছেন। আর যায় কোথায়? মন্ত্রীর স্ত্রীর ভাগ্নে প্রান্ত গভীর রাতে মাকে ফোন করে এই অপমানের কথা জানান।
ভাগ্য কাকে বলে, পাশেই ঘুমিয়ে মন্ত্রীর স্ত্রী।
তাকে ডেকে ফোন ধরিয়ে দিলেন। সব শুনে তিনি ক্ষিপ্ত। ভীষণ ক্ষীপ্ত। মন্ত্রীকে জানালেন। শুক্রবার সারারাত রেল বিভাগে অস্থিরতা। সকালে টিটিই বরখাস্ত। প্রশান্তি নিয়ে বিছানায় হেলান দিলেন মন্ত্রীর স্ত্রী। শান্তি পেলেন মন্ত্রীও। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। মাত্র শুরু। মন্ত্রীকে ধরলেন সাংবাদিকরা। তিনি বললেন, যাত্রীদের আমি চিনি না। আমার আত্মীয়ও নয়।
মাঝখানে সারারাত কষ্ট করেছে। আর তাদের কাপড় হারিয়েছে। রেলমন্ত্রীর এ ঘটনা মনে করিয়ে দেয় স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমরা মন মানসিকতায় একটুও এগুইনি। দুই মাতালের মতোই রয়ে গেলাম। না হয়, যেখানে টিটিই শফিকুলকে বাহবা দেয়ার কথা সেখানে শাস্তি দেয়া হলো। হায় সেলুকাস। সম্রাট শাহজাহান স্ত্রীর প্রেমে তাজমহল বানিয়েছেন। বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনও স্ত্রীর প্রেমে দেশে সাড়া জাগানো কাজ করেছেন। এটাও তো একটা তুলনা। কি বলেন?
আসলে এত বেশি প্রেমে মজেছেন যে অন্ধ হয়ে গেছেন মন্ত্রী। যার কারণে সমাজ উপকারের বদলে পায় অপকার। এই অতি প্রেমের পরিণতি হয় ভয়াবহ। এর রেশ গিয়ে পড়ে সমাজ, সংসার, রাষ্ট্র সব কিছুতেই।