বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় নির্বাচনের অনিয়মের সমালোচনায় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির কড়া সমালোচনা করেছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সারা বিশ্বের মানবাধিকার নিয়ে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন ‘ওয়ার্ল্ড রিপোর্ট ২০২০’তে বাংলাদেশ অধ্যায়ে তারা বলেছে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনে মারাত্মক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি ছিল সারা বছরই। কিন্তু সেই আহ্বানকে তোয়াক্কা করেনি ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার। দুই বছরের মতো সময় জেলে আছেন বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রধান খালেদা জিয়া। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও সমালোচক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী ও অধিকারকর্মীদের কণ্ঠরোধ করা বন্ধ হয় নি। পক্ষান্তরে ভূমিধস বিজয়ের ফলে দৃশ্যত এসব পক্ষকে দমনপীড়নে উৎসাহী হয়েছে কর্তৃপক্ষ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনার ওপর ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, জোরপূর্বক গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো নির্যাতনে যুক্ত থাকা নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়মুক্তি ছিল এ বছরে পরিব্যাপক। সরকারের সমালোচকদের দমনপীড়নে মত প্রকাশের স্বাধীনতার আন্তর্জাতিক মানদ- অব্যাহতভাবে লঙ্ঘন করেছে সরকার। প্রতিবেশী মিয়ানমারের প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে জোর করে তাদের ফেরত না পাঠিয়ে আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে বাংলাদেশ।
যদিও আশ্রয় শিবিরগুলোতে অবকাঠামো উন্নয়নে বাধা দিচ্ছে সরকার। এর ফলে সেখানকার অবস্থা নাজুক থেকে নাজুক হচ্ছে। বার বার সরকার হুমকি দিচ্ছে শরণার্থীদেরকে বসবাসের অযোগ্য একটি দ্বীপে পুনর্বাসন করার। আশ্রয় শিবিরগুলোতে চলাচলের স্বাধীনতা সীমিত করা হয়েছে। সীমিত করা হয়েছে ইন্টারনেট সুবিধা। এতে আরো বলা হয়, মার্চে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করার পর কমপক্ষে ৭৫০০ গার্মেন্ট শ্রমিককে কাজ থেকে ছাঁটাই করা হয়েছে। অনেক বছরের মধ্যে বাংলাদেশে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে এটি সবচেয়ে বড় দমনপীড়ন। বিয়ের সনদে বাংলাদেশের মুসলিম নারীরা কুমারী কিনা তা ঘোষণা করা বিষয়ে বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করে হাইকোর্ট। এতে লিঙ্গ সমতায় আরো একধাপ অগ্রগতি হয়েছে। অধিক হারে নারীরা কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেছেন।