নিজ কক্ষে ঢুকতে পারছেন না ভিপি নুর
ডাকসু ভবনে ছাত্রলীগ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের হামলার পর ২২ দিন ধরে ভিপির কক্ষ বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভিপি নুরুল হক নুর। ফলে সুস্থ হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরেও নিজ কক্ষে প্রবেশ করতে পারছেন না তিনি।
তার অভিযোগ, তদন্তের কথা বলে প্রশাসন কক্ষটির চাবি নিয়ে নিয়েছে। কিন্তু তদন্তের জন্য বেঁধে দেয়া সময় অতিবাহিত হলেও চাবিটি ফেরত দেয়া হয়নি। সর্বশেষ মঙ্গলবার চাবি দেয়ার কথা থাকলেও, সেদিনও তা দেয়া হয়নি। এর ফলে সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছেন ভিপি।
ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, এক আজব অবস্থার মধ্যে আমরা আছি। হামলার শিকার হলাম আমি, আবার সিলগালাও করা হয়েছে আমার কক্ষ। যদি তদন্তের স্বার্থে দু’চারদিনের জন্য চাবি নেয়া হয় তাহলে ঠিক আছে।
কিন্তু তদন্তের জন্য নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও দীর্ঘদিন ধরে কক্ষটি বন্ধ রাখা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ভিপির কক্ষ এভাবে বন্ধ রাখা অযৌক্তিক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত।
নুর বলেন, ৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে এসে ভিসি স্যারকে বলেছি কক্ষটি খুলে দেয়ার জন্য এবং কক্ষের সংস্কারের জন্য। কক্ষটি খোলার জন্য ১২ তারিখও ভিসি ও প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলেছি।
তারা বলেছেন, তদন্তের জন্য কক্ষটি বন্ধ রাখা হয়েছে। তদন্ত কমিটির থেকে চাবি নিয়ে নিতে। এরপর তদন্ত কমিটির প্রধানের কাছে চাবি চেয়েও আমরা পাইনি। সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় তিনি চাবি দিবেন বলে জানিয়েছিলেন। অথচ ৪টা থেকে সোয়া ৫টা পর্যন্ত কমিটি প্রধানের কার্যালয়ে বসে থেকেও চাবি পাইনি। তিনি পারিবারিক কাজে ব্যস্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তদন্ত কমিটির প্রধান ব্যস্ত হলে চাবিটা অন্য কাউকে দিয়েও পাঠাতে পারতেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কমিটির প্রধান ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগ নামক বাসের হেল্পার উল্লেখ করে নুরুল হক নূর বলেন, কোনো ঘটনা ঘটলে সেখানে ছাত্রলীগ জড়িত থাকলে তদন্ত কমিটির নামে ব্যবস্থা গ্রহণে কালক্ষেপণ করা বা দায়সারা কমিটির প্রতিবেদন না দেয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র হয়ে যাচ্ছে।
এর আগে এসএম হলের ঘটনাতেও সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলে তা আর প্রকাশ করা হয়নি। এবারও ঘটনা ধামাচাপা দিতে এমন করা হচ্ছে বলে আশংকা করছি।
ভিপি বলেন, অনেক শিক্ষার্থী আমার কাছে আসে। কক্ষটি বন্ধ থাকার কারণে ঠিকভাবে কাজ করতে পারছি না। ডাকসুর অন্য সব কক্ষে স্বাভাবিক কার্যক্রম চললেও আমার কক্ষ কেন এতদিনের জন্য সিলগালা?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী বলেন, নুর কি বলেছে সেই বিষয়ে কথা বলতে চাই না। কারণ বিষয়টি তদন্তাধীন। তবে আমার ধারণা এটি জটিল কোনো বিষয় নয়। এটি মিডিয়ার কাছে উপস্থাপনের মতো কোনো বিষয়ও নয়।
সে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেই বিষয়টির সমাধান করে নিতে পারে। আমি নূরকে পরামর্শ দেব, অভিযোগ করার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে। ভিপিকে চাবিটি দেয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নে প্রক্টর বলেন, অবশ্যই চাবি দেয়া হবে।