পুলিশ বন্ধুর ইয়াবার ব্যাগ বহন করে যুবক আটক

0

পুলিশ কনস্টেবল উৎসব কুমার সরকারের ব্যাগ বহন করতে গিয়ে ইয়াবা সহ র‌্যাবের হাতে আটক হয়েছেন কনস্টেবলের বন্ধু অশীম কুমার।

গত ১৯ এপ্রিল ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের হোটেল ফুড ভিলেজের সামনে থেকে  ৪ হাজার ২৪৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট সহ তাকে আটক করে র‌্যাব -৫।

পুলিশ কনস্টেবল উৎসব এবং অসীম কুমারের বাড়ী গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের কিশামত গোপালপুর (সুখানদিঘী) গ্রামে। সম্পর্কে তারা পরস্পর চাচাতো ভাই ও ঘনিষ্ট বন্ধু।

উৎসব ওই এলাকার উজ্জল কুমার সরকারের ছেলে এবং অসীম বাদল চন্দ্র সরকারের ছেলে। অসীম স্থানীয় সুখানদিঘী বাজারে মনোহরী ব্যবসা করতেন। আর উৎসব কক্সবাজার জেলায় আমর্ড পুলিশে কর্মরত।

এদিকে অশীম কুমারের পরিবারের দাবি, বন্ধু পুলিশ কনস্টেবল উৎসব তাকে ১৫ এপ্রিল সকালে ফোন করে কক্সবাজারে ডাকে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে কয়েকদিন ঘুরে দুই বন্ধুর এক সাথে বাড়ি ফেরার কথা।

কিন্তু ছুটি না পাওয়ায় ১৯ এপ্রিল কনস্টেবলকে রেখে অসীমকে কক্সবাজার থেকে একটি কাপড় ভর্তি ব্যাগসহ রওনা হন। ব্যাগটি গ্রামের বাড়ীতে তার বাবার হাতে দিতে বলেছিল  উৎসব।

কিন্তু বিধি বাম। সেই ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় ইয়াবা ট্যাবলেট। মাদক ব্যবসার অভিযোগে অসীম কে আটক করে র‌্যাব। পরে শেরপুর থানায় মাদক আইনে মামলা হলে কারাগারে পাঠানো হয় অসীম কুমারকে।

এ খবর বিভিন্ন টেলিভিশনে প্রচার হলে তা এলাকার অনেকেরই নজড়ে পড়ে। শুরু হয় দুই বন্ধুকে নিয়ে নানা রকমের গুঞ্জণ।

ছবি:  পুলিশ কনস্টেবল উৎসব কুমার সরকার

এলাকাবাসী জানায়, কনস্টেবল উৎসব ছুটিতে বাড়িতে এসে মাদকের ব্যবসা করত। বর্তমানে ওই এলাকার অনেক যুবক এখন মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। তারা নেশার টাকা যোগাড় করতে গিয়ে নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।

স্থানীয় সাইফুল ইসলাম জানায়, কিছুদিন আগে মাদক বিক্রি ও সেবন করার সময় বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। কিন্তু চাকরি হারানোর ভয়ে বিষয়টি টাকা পয়সা দিয়ে ধামাচাপা দেয় উৎসবের বাবা উজ্জল কুমার সরকার ।

এদিকে উৎসবের ফাঁদে পা দিয়ে আটক হওয়ার পর অসীমের সাথে জেলখানায় দেখা করতে যায় তার পরিবার। সে সময় বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলেন অসীম কুমার।

পরে অসীমের পরিবার স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম সবুজ সহ নেতৃস্থানীদের কাছে নিরপরাধ অসীমকে ফাঁসানোর জন্য উৎসবের বিচার দাবি করেন।

শুরু হয় দিনে রাতে দফায় দফায় বৈঠক। এলাকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা উৎসবের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে উৎসব দুঃখ প্রকাশ করে অসীমকে জামিনে মুক্ত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা করা আছে বলে আশ্বাস দেন।

অশীমের দাদা বিভুতিভূষন সরকার বলেন, উৎসব কক্সবাজার থেকে প্রায় মাদক নিয়ে এসে এলাকায় বিক্রি করতো। কিছুদিন আগেও মাদক বিক্রির সময় এলাকাবাসী তাকে আটক করে। পরে ১লাখ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে সেখান থেকে ছাড়া পায়।

অশীমের চাচি সবিতা রানী বলেন, আজ উৎসবের ফাঁদে পড়ে আমার ভাতিজা অশীম কারাগারে। তাকে জামিনের ব্যবস্থা তারা করতে চাইলেও এই ক্ষতি কোনোদিনই পুরন হবার নয়। এসময় পুলিশ সদস্য উৎসবের শাস্তিরও দাবি করেন তিনি।

ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম সবুজ বলেন,ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। অসীমের মতো ভালো ছেলে এই এলাকায় কমই দেখা যায়। উৎসব পুলিশ সদস্য হয়ে মাদক ব্যবসা করতো সেটি আগে থেকেই জানতাম।কিন্তু অসীম ওর ফাঁদে পা দেবে ভাবতেই পারিনি  কোনোদিন।

তিনি আরও বলেন, অসীমের জামিনের খরচ বাবদ এক লক্ষ টাকা ধরা হয়েছে। সেই টাকার মধ্য উৎসবের বাবা উজ্জল কুমার সরকার ৭৫ হাজার টাকা দিতে রাজি হয়েছেন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com