খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানীতে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল
বিএনপি চেয়ারপার্সন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারের দাবিতে বিএনপি’র অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আজ বেলা ২-০০টায় রাজধানীর শান্তিনগরস্থ কর্নফুলী গার্ডেন সিটির সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কয়েকটি এলাকা প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। মিছিলে অংশগ্রহণ করেন-ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান নাদিম, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, যুবদল নেতা সোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ডাঃ জাহিদুল কবির জাহিদ, মোর্শেদ আলম, বাবুল সারেং, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রদল নেতা রাজু আহমেদ, ছাত্রদল নেতা জাভেদ ইকবাল, মামুন হোসেন ভূঁইয়া, ফজলুল হক নীরব, আসলাম, দুলাল, যুবদল নেতা ফারুক পাটোয়ারীসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
মিছিল শেষে এক পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোটের আগের রাতে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী বর্তমান শাসকগোষ্ঠী এখন এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, জনগণের আশা-আকাঙ্খাকে পদদলিত করে গতকাল চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপ-নির্বাচনে সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র দখল করে সরকারদলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করতে যেধরণের পেশীশক্তি প্রদর্শন করা হলো তাতে আগামী ৩০ জানুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে জনমনে গভীর শংকা সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিজের সাংবিধানিক স্বাধীনতা বিসর্জন দিয়ে সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য কলুষিত নির্বাচন ও ভোটের কারণে দেশে চরম রাজনৈতিক অসুস্থতা দেখা দিয়েছে।
মধ্যরাতের ভোটের সরকারের দাম্ভিকতা ও প্রতিহিংসার শিকার দেশের চারবারের প্রধানমন্ত্রী ও গণমানুষের ভরসাস্থল বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে জীবন বিপন্ন করার চক্রান্ত চলছে। দেশনেত্রীকে কারাগারে রেখে আমরা বাইরে বসে থাকতে পারিনা, তাঁর মুক্তির জন্য দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে নেমে আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে বারবার এটি সুষ্পষ্টভাবে প্রমানিত হয়েছে যে, তাঁর ইচ্ছাতেই বেগম জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়েছে। শারীরিকভাবে ভীষণ অসুস্থ বেগম জিয়াকে নিয়ে কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘আয়েশ-পায়েশ’ ইত্যাদি কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যে তাঁর নিষ্ঠুর মনেরই পরিচয় পাওয়া যায়। যে নেত্রী গণতন্ত্রের পক্ষে, মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে, রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে সেই দেশনেত্রীকে নির্যাতন করে শেখ হাসিনা আনন্দ লাভ করেন।
ভয়াবহ দু:শাসন আর উন্নয়নের চাপাবাজী শুনতে শুনতে দেশের মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে, লুটপাটের উন্নয়নের কথা শুনতে শুনতে জনগণ প্রচন্ড অতিষ্ঠ হয়ে উঠলেও নির্লজ্জ সরকারের তথাকথিত উন্নয়নের গলাবাজী থামছেই না। তবে বাগাড়ম্বর করে জনগণের ক্ষোভকে নেভানো যাবে না। যে দেশনেত্রী স্বৈরশাসকদের বন্দীশালা থেকে বারবার অবরুদ্ধ গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে আপোষহীন সংগ্রাম করেছেন সেই দেশনেত্রী ‘গণতন্ত্রের মা’-কে বন্দী রেখে বর্তমান সরকার যে নিষ্ঠুর খেলা খেলছে তার পরিণাম শুভ হবে না। বর্তমান আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ভয়াবহ দু:শাসন ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর যে হিং¯্র আচরণ চালাচ্ছে তাতে বিশ্বের সকল স্বৈরাচারের ইতিহাস হার মেনেছে। নারী-শিশু নির্যাতনকারী ও দখলবাজ-লুটেরারা দেশব্যাপী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এই ভয়াবহ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে জাতীয়তাবাদী শক্তি জনগণকে সাথে নিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে এখন দৃঢ়বদ্ধ।
আমি আবারও অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর পছন্দের হাসপাতালে সুচিকিৎসার সুযোগসহ নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি কারাবন্দী সকল নেতাকর্মীরও নি:শর্ত মুক্তি দাবি করছি।
বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এর নেতৃত্বে মিছিল শুরু হলে মিছিলে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ‘গণতন্ত্রের মা’ এদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারের দাবিতে সোচ্চার কন্ঠে শ্লোগান দিয়ে রাজপথ প্রকম্পিত করে তোলেন।