বাংলাদেশ ভয়াবহ সংকটের মধ্যে রয়েছে: সংকট নিরসনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান বিএনপি’র

0

সরকার হটানোর আন্দোলনে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) বিকেলে মালিবাগে স্কাই সিটি গ্র্যান্ড হোটেলে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ আহ্বান জানান।

ড. মোশাররফ বলেন,  বাংলাদেশ একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশ একটা ধ্বংসের কিনারায় পৌঁছে গেছে। কারা এটা করেছে? আজকে যারা গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে তারা। এখন সকলে ঐক্যমত পোষণ করেছে, এই দেশের জনগণ এই স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট সরকারকে আর দেখতে চায় না। এখানে আমরা যারা রাজনৈতিক দল এই সরকারকে পছন্দ করি না, এই দেশের মানুষ পছন্দ করে না, আমাদের দায়িত্ব এই দেশের মানুষকে এই সরকারের হাত থেকে রক্ষা করা। জনগণের ঐক্য ছাড়া, সকল রাজনৈতিক বিরোধী দলের ঐক্য ছাড়া এই সরকারকে হটানো সম্ভব হবে না। সেই লক্ষ্যে আসুন আমরা কাজ করি।

তিনি বলেন, আমি শুধু বলতে চাই, কোনো স্বৈরাচারী সরকার আপসে ক্ষমতা ছেড়ে যায় না। তাই স্বৈরতন্ত্রকে অতীতে যেভাবে তৎকালীন পাকিস্তান ও বাংলাদেশে আমরা ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে হটাতে পেরেছি, ঠিক একইভাবে আজকে শেখ হাসিনার স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট সরকারকে হটাতে হবে। এটাই জনগণের প্রত্যাশা।

ড. মোশাররফ আরও বলেন, আমি সকল জনগণকে আহ্বান করবো, সকল গণতান্ত্রিক শক্তি, সকল জাতীয়তাবাদী শক্তি যারা দেশপ্রেমিক সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আজকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্রকে রক্ষা করা, এ দেশের মানুষের অধিকারকে রক্ষা করা, এ দেশের মালিকানা, এ দেশের জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হই। এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি, সংসদ বাতিলের দাবি করছি এবং অনতিবিলেম্ব নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দাবি করছি।

গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক ড. রেজা কিবরিয়া বলেন, দেশের অনেক দলের শীর্ষ নেতারা এখানে উপস্থিত হয়েছেন। তাই আমরা সবাই মিলে যদি একসাথে কাজ করি তাহলে এই দেশকে অন্ধকার থেকে উদ্ধার করতে পারবো। এই ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবো।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- আমরা নাকি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছি। কিসের ষড়যন্ত্র? এই সরকারকে তো দেশের মানুষ আর চায় না। আমাদের বক্তব্য পরিস্কার, আপনারা ভালো মানুষের মতো চলে যান। আর তা যদি না হয় আপনাদের বিদায় আরো করুণভাবে হবে।

বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, আমাদের সরকারের ক’জন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী গত ক’দিন ধরে বলছেন, সরকারের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র চলছে। আমি আমার গণতান্ত্রিক অধিকার চাই, আমি আমার ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই, আমি একটি নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের অধীনে গণতান্ত্রিক পন্থায় একটি নির্বাচন চাই এসব কি ষড়যন্ত্র? এই বক্তব্য নিশ্চয়ই কোন ষড়যন্ত্র নয়। সরকারের মন্ত্রীদের এমন বক্তব্যে তাদের ভেতরের নার্ভাসনেসের স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। আর গত দু’টি নির্বাচনের মতো আগামী নির্বাচনও যদি হয় তাহলে বাংলাদেশ একটি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে নিমজ্জিত হবে।

গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশের একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা এখন আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য। এ জন্য আমাদের যার যার অবস্থান থেকে সবাইকে সর্বোচ্চ ভ’মিকা রাখার আহবান জানাই।

বিশিষ্ট রাষ্ট্র বিজ্ঞানী প্রফেসর ড.  দিলারা চৌধুরী বলেন, সরকার শুধু উন্নয়নের কথা বলেন। কিসের উন্নয়ন হয়েছে। এদেশের মানুষেরতো উন্নয়ন হয়নি। মানুষের উন্নয়ন না হলেতো কোন উন্নয়নই ফলপ্রসু হবে না। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পরে আমরা বুঝেছি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়। এ দেশের সকল রাজনৈতিক দলের উচিত হবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়া।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের সঞ্চালনায় ইফতার ও দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, এনপিপির চেয়ারম্যান ডা. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল করিম ভ’ইয়া, জাতীয় পার্টির (জাফর) মহাসচিব আহসান হাবীব লিঙ্কন, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ,  বিশিষ্ট কবি ও লেখক ফরহাদ মাজহার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও নৈতিক সমাজের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন, এবি পার্টির আহবায়ক ড. সোলায়মান চৌধুরী, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহাসচিব ইয়ারুল ইসলাম, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, শায়রুল কবির খান, গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, ফারুক হাসান, আবু হানিফ, মাহফুজ, সোহরাব, সাদ্দাম হোসেন, এড. খাদেমুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্য সচিব আতাউল্লাহ, আব্দুজ জাহের, সহকারি যুগ্ম আহবায়ক তামান্না ফেরদৌস শিখা, ফাতেমা তাসনিমসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com