রমজানে যে ৩ গুণ অর্জন করা জরুরি

0

সব প্রশংসা মহান আল্লাহর জন্য, যিনি বরকতময় রমজান মাসকে মুসলিম উম্মাহর জন্য রহমত মাগফেরাত ও নাজাত পাওয়ার উসিলা বানিয়েছেন। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর এ মাসেই মানুষের জীবন বিধান হিসেবে এই কোরআনুল কারিম নাজিল করেছেন। কোরআনের হেদায়েত পাওয়ার সর্বোত্তম মাসও এটি।

১. মসজিদে সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা

মসজিদে সঙ্গে রোজাদারের সম্পর্ক হোক স্থায়ী। কোনো মুমিন মুসলমানের জন্য এমনটি হওয়া উচিত নয় যে, সে শুধু রমজানেই নামাজ পড়তে মসজিদে যাবে। বরং মসজিদের সঙ্গে সব মুসল্লির সম্পর্ক হবে স্থায়ী। মুমিনের জন্য দুনিয়াতেই মসজিদ হবে জান্নাতের সর্বোত্তম নমুনা।

২. রমজানে কোরআন শেখা

রমজান হোক কোরআন শেখার মাস। রমজানে কোরআনের সঙ্গে তৈরি হোক স্থায়ী সম্পর্ক। কোরআনের সঙ্গে সম্পর্ক যেন রমজান কেন্দ্রিক না হয়। রমজানে কোনো ইসলামিক স্কলার কিংবা কোনো ব্যক্তির উপদেশ যেন এমন না হয়-

‘কোরআন তেলাওয়াত করতে না পারলে বা না জানলে ‘কুল হুওয়াল্লাহ’ সুরা কিংবা কোনো দোয়া-জিকিরের অজিফা দুই শত বার কিংবা চার শত বার পড়ুন!’

বরং রমজান মাস হলো কোরআন শেখার সর্বোত্তম মাস। কোরআন পড়তে না জানলে ২/৪/৬ কিবাং হাজার বার কোনো সুরা, দোয়া পড়ার তালিম নয়; বরং আউজুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ থেকে শুরু করে এক আয়াত, দুই আয়াত, একটি সুরা, দুইটি সুরা, এক পারা, দুই পারা- এভাবে কোরআন শেখানো বা শেখার উপদেশই সর্বোত্তম। এভাবে কোরআন পড়া ঈমানের একান্ত দাবি। কোরআন নাজিলের মাস রমজানেই মুমিন মুসলমানের জন্য তেলাওয়াত শেখার সর্বোত্তম সুযোগ।

মনে রাখতে হবে

কেউ যদি কোরআন পড়তে না পারেন তবে জোড় দিয়ে এ কথা বলতে হবে। আপনি কোরআন শিখুন। আপনাকে কোরআন পড়তে হবে। কোরআন শিখতে হবে।

অনেকে রমজান মাসে তারাবিতে কোরআন শুনে। তারাবির নামাজে কোরআন তেলাওয়াত শোনা কোনো মুমিনের শান নয়। বরং মুমিনকে কোরআন তেলাওয়াত শোনানোর যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। কোরআন পড়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। এক সুরা, দুই সুরা, এক পারা, দুই পারা এভাবে পরিমাণ বাড়াতে হবে। যেন এক পর্যায়ে পুরো কোরআন তেলাওয়াত করতে সক্ষম হয়।

দেখে দেখে পুরো কোরআন পড়ার যোগ্যতা অর্জন করার মাধ্যমে রমজানের রহমত মাগফেরাত ও নাজাত পাওয়ার চেষ্টা করা। তাই রমজানেই কোরআন শেখার মেহনত শুরু করা জরুরি। প্রয়োজনে আরবি ২৯টি হরব শেখার মাধ্যমে তা শুরু করা যেতে পারে।

কোরআন শেখার হুকুম

কোরআন শেখা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য ফরজ। বিশুদ্ধভাবে কোরআন তেলাওয়াত শেখা সবার উপর ফরজ। কোরআন শেখার জন্য কোনো অজুহাত-ওজরের প্রয়োজন নেই। আর কোনো ওজর দিয়ে পার পাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।

শিশু, কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ সবার জন্য পুরো কোরআন তথা সুরা ফাতেহা থেকে নাস পর্যন্ত দেখে দেখে বিশুদ্ধভাবে পড়ার যোগ্যতা অর্জন করা জরুরি। তাই রমজানই হোক সবার জন্য কোরআন শেখার সর্বোত্তম সময়।

৩. কোরআনের লানত/অভিশাপ থেকে বেঁচে থাকা

এমন অনেক মানুষ আছে, যারা কোরআন তেলাওয়াত করে আর কোরআন তাদের লানত করে। অভিশাপ দেয়। কোরআনের ভাষায় নিজেকে নিজে লানত করে চলেছে। বিষয়টি এমন-

কোনো লোক নিজে মিথ্যাবাদী। কথা ও কাজে মিথ্যা ত্যাগ করে না অথচ সে তেলাওয়াত করছে-

فَنَجْعَلْ لَعْنَتَ اللهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ

মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লানত বা অভিশাপ।

কোনো লোক নিজে অন্যের উপর অত্যাচারী। মানুষের উপর যুলম করে। হয়ত সে পড়ছে-

أَلَا لَعْنَةُ اللهِ عَلَى الظَّالِمِينَ

অত্যাচারীদের উপর আল্লাহর লানত।

এভাবে কোরআন তেলাওয়াতকারী নিজেই নিজের ধ্বংসের জন্য আল্লাহর কাছে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ধ্বংস প্রার্থনা করে। তাই কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, রমজানে মসজিদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়বো এবং কোরআন তেলাওয়াত শেখার পাশাপাশি কোরআনের লানত থেকে নিজেদের মুক্ত রাখা। মিথ্যা ও অত্যাচার থেকে মুক্ত থাকাও জরুরি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রমজানের রোজায় মসজিদ হয়ে এবং কোরআন তেলাওয়াত শিখে বছরব্যাপী এ আমল জারি রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com