ধর্ষণ মামলায় জেন্ডার সমতা নিয়ে হাইকোর্টের রুল
ধর্ষণের মামলায় জেন্ডার সমতা (বলাৎকার, শিশুধর্ষণ, পুরুষ কর্তৃক পুরুষ, নারী কর্তৃক নারী ও হিজড়া) কেন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ সংশ্লিষ্ট দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা কেন সংশোধন করা হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয় সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) এসব রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ১০ এপ্রিল বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারি দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় নারী ধর্ষণের অপরাধের পাশাপাশি পুরুষ ধর্ষণকেও অপরাধ হিসেবে সংযুক্ত করতে ধারাটির সংশোধন চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। মানবাধিকারকর্মী তাসমিয়া নূহাইয়া আহমেদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক ড. মাসুম বিল্লাহ ও সমাজকর্মী ড. সৌমেন ভৌমিকের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার তাপস কান্তি বল রিটটি দায়ের করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় শুধু পুরুষ দ্বারা নারীদের ধর্ষণের বিষয়ে শাস্তির কথা বলা হয়েছে। অথচ সম্মতি ছাড়া নারীর দ্বারা নারী, নারীর দ্বারা পুরুষ, পুরুষ দ্বারা পুরুষ বা এক ট্রান্সজেন্ডার (রূপান্তরিত লিঙ্গ) কর্তৃক আরেক ট্রান্সজেন্ডার যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। অথচ বিষয়টি উল্লেখ নেই আইন ও বিধানে।
রিট আবেদনে আরও বলা হয়েছে, সম্প্রতি দেশে ছেলেশিশু তথা পুরুষকে যৌন নির্যাতন ও বলাৎকারের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কিন্তু এ ধরনের নির্যাতনকে ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে বিচার করা যাচ্ছে না। তাই দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় সংশোধন এনে ‘নারী ধর্ষণ’ এর অপরাধের পাশাপাশি অপরাধ হিসেবে ‘পুরুষ ধর্ষণ’ বিষয়টিকে যুক্ত করা প্রয়োজন। দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে পুরুষ কর্তৃক শিশুদের বলাৎকারকে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করে এ ধরনের অপরাধ ধর্ষণের মতোই শাস্তিযোগ্য করতে আইনে সংশোধনেরও প্রয়োজন রয়েছে।