সরকারের দুর্নীতি তদন্তে দুদকে চিঠি দেবে বিএনপি

0

ক্ষমতাসীন দল এবং সরকারের দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। সোমবার (১১ এপ্রিল) সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান দুর্নীতির একটা মহা উৎসব চলছে। আমরা দুর্নীতির বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথা বলেছি। সরকারের এক উপদেষ্টা (সালমান এফ রহমান) ও আইনমন্ত্রীর (আনিসুল হক) টেলিফোন কনভারসেশন যেটা আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। সেই কনভারসেশনে যে বিষয়গুলো ছিলো সেটা আমরা জানতে চেয়েছিলাম, এর তদন্ত হয়েছে কিনা তাও জানতে চেয়েছিলাম। ফরিদপুরের অত্যন্ত সেনসিটিভ একটি পরিবার সেই পরিবারের এক সদস্যের বিরুদ্ধে ২ হাজার কোটি টাকা অর্থ পাঁচারের অভিযোগ এবং তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়গুলো দেখা যাচ্ছে ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। আর কোনো কথাই হচ্ছে না এগুলো নিয়ে। আমরা দলের সর্বোচ্চ ফোরামে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা দুর্নীতির এই বিষয়গুলো নিয়ে আপাতত দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি দেবো। সেই চিঠিতে তাদেরকে আমরা তদন্ত করার জন্য অনুরোধ করবো। এরপরে ধারাবাহিক ভাবে প্রত্যেকটা ইস্যু যেটা আসছে সেটা আমরা জাতির কাছে তুলে ধরব এবং একই সঙ্গে দুদকে পাঠাব।

দলের এই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে আজ দুপুরে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ‘উপদেষ্টা ও মন্ত্রীর টেলিফোন কনভারসেশনের বিষয়বস্তু’ ও ‘ফরিদপুরে ২ হাজার কোটি টাকার পাঁচারের বিষয়ে’ তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের চিঠি নিয়ে যাবেন বলে জানান মহাসচিব।

তিনি বলেন, আমরা আশা করবো দুদকের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা আমরা দুর্নীতির যে বিষয়গুলো  দিচ্ছি সেগুলোর ওপরে সুষ্ঠু তদন্ত করে তা জাতির সামনে তুলে ধরবেন এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ যে ব্যবস্থা আছে তা গ্রহণ করবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দুদক অত্যন্ত সিনসেটিভ ইস্যুগুলো বিষয় নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আপনারা লক্ষ্য করেছে যে, দুর্নীতি দমন কমিশনে একটু যারা কাজ করতে চান, তাদের স্টাফ অর্থাৎ কর্মকর্তা-কর্মচারি তাদের বিরুদ্ধে দুদকই ব্যবস্থা নেয়। কিছুদিন আগে দেখেছেন যে, একজন কর্মকর্তা শরীফ সাহেবকে বদলি করা হয়েছে এবং পদাবনতি করা হয়েছে । একটি বিশেষ দুর্নীতির মামলার তদন্ত করার কারণে। আজকে পত্রিকায় আছে, দুর্নীতি দমন কমিশন তারা নিজেরাই দুর্নীতির যেসব বিষয়গুলো আসছে সেগুলো তদন্ত করে যে রিপোর্টগুলো আসছে সেগুলোর তারা আমলে নিচ্ছে না এবং সেগুলোকে তারা ধামাচাপা দিয়ে রাখার ব্যবস্থা করছে।

তিনি বলেন, দুদকের বেশির ভাগ সরকারি আমলাকে নিয়োগ দেয়া হয় অথবা সাবেক আমলাদেরকে নিয়োগ দেয়া হয় তারা অত্যন্ত সচেতনভাবে চেষ্টা করেন যে, সরকারের উচ্চ পর্যস্ত কর্মকর্তা যারা আছেন তারা অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা যারা আছেন তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত যাতে না হয় এবং দুর্নীতির মধ্যে তারা যেন না আসেন। বাংলাদেশের যে সম্ভাবনাটা তৈরি হয়েছে সেগুলোকে ধ্বংস করে ফেলার জন্য দুর্নীতি সবচেয়ে বড় ব্যাধি। এটা এখন ক্যান্সার আকারে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কোথায় পাবেন না যে, ঘুষ দেয়া ছাড়া কোনো কাজ হবে না, কথা শুনবে না, আইন-আদালতে বিচার পাবে না এবং সবচেয়ে খারাপ অবস্থাটা হচ্ছে আদালতে, সেখানে সব হুকুমে কাজ হয় সেখানেও কোনো কাজ হয় না দুর্নীতি ছাড়া। এর কারণটা হচ্ছে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে দুর্নীতিকে আজকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল উপস্থিত ছিলেন।

পরে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু দুদকের উদ্দেশ্যে গুলশানের কার্যালয় থেকে রওনা হন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com