শেখ হাসিনাকে মেনে নেওয়া বা তাকে বিদায় দেওয়ার মাঝামাঝি কোনো অবস্থা নেই: গয়েশ্বর

0

বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মেনে নেওয়া বা তাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় দেওয়ার ‘মাঝামাঝি কোনো অবস্থা নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে ১২ বছর ধরেই আন্দোলন করছি। আন্দোলন এখনো চলছে। রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা ও সম্পদ হাতেগোনা কিছু লোকের হাতে। গত ১৪ বছরে ১৪টি বাজেট হয়েছে। উন্নয়ন বাজেট হয়েছে। এসব বাজেট ও উন্নয়ন প্রকল্পের নামে রাষ্ট্রের যে পরিমাণ টাকা লুটপাট হয়েছে, হিসাব করলে তা বহু টাকা হবে।

রোববার (১০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তারেক জিয়ার প্রজন্ম দল আয়োজিত নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র আরও বলেন, মাথাপিছু গড় আয় একটা শুভঙ্করের ফাঁকি। কারণ, একজন হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করে। আপনার আমার আয় কত। এ দুই পর্যায়ের ব্যক্তির আয় গড় করলে সেটা কত দাঁড়ায়। তাই বলছি, গড় আয় একটা শুভঙ্করের ফাঁকি। গড় আয় দেখালেও গড় ঋণটা কিন্তু দেখানো হয় না।

বিএনপির জাতীয় সরকারের ধারণাকে স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও দেশের মানুষের কল্যাণের স্বার্থে দাবি করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সবার সম্মিলিত অংশগ্রহণে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশে আরও ৫০ বছর আগেই জাতীয় সরকারের ধারণা দেওয়া দরকার ছিল। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর বিএনপি জাতীয় সরকারের যে ধারণা দিয়েছে তা দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য, দলের নেতাকর্মীদের কথা চিন্তা করে নয়।

তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় সরকারের কথা বলা হচ্ছে। ৫০ বছর আগে যেটা দরকার ছিল এখন সেটা নেয়া হচ্ছে। জনগণের ম্যান্ডেটই নয় দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য এটা দেয়া হয়েছে। দলের কর্মী বা নেতাদের কথা চিন্তা করে নয়। বিদেশীরা সেনশন দিয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ এই সরকারকে আরো আগেই সেনশন দিয়ে দিয়েছে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছি। এজন্য সরকার নানা কথা বলে। কিন্তু বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় ঊর্ধ্বগতিসহ দেশে যে পরিস্থিতি, এতে সরকারের প্রতি মানুষের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। মানুষ ভোট দিতে পারছে না। আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা আমরা ভালো কর্মসূচি দিতে পারিনি। আমরা আমাদের নেত্রীর মুক্তি আন্দোলন সফল করতে পারিনি। এ সরকার একটা চোর, ডাকাত, খুনি। তাই এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, পাকিস্তান আমল থেকে আমাদের দেশের ক্রান্তিকাল শুরু হয়েছে, যা এখনো কাটেনি। আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবারই মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোটের আগে ১৫৩টি আসন বিনা ভোটে নির্বাচিত হয় কেন? নির্বাচনের দিনের ভোট আগের রাতে হয় কেন? উন্নয়নকাজের নামে সরকার ঋণ করে দেশকে বিপদে ঠেলে দিচ্ছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী বলেন, বাংলাদেশে প্রথম কারচুপির নির্বাচন হয় ১৯৭৩ সালে। তারপর থেকে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। দেশের রাজনৈতিক অর্থনীতি ভালো নেই। তাই আমাদের নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।

তারেক জিয়ার প্রজন্ম দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জিনাফ সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে রকিবুল ইসলাম রিপন ও মোক্তার আখন্দ প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com