গ্রেপ্তার-হামলা-নির্যাতন এটাই কি সম্প্রীতির নমুনা?

0

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিএনপির প্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেছেন, ‘আমার নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দেয়া হচ্ছে, আমার সমর্থকদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, বাসায় তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। কিন্তু আমার প্রতিপক্ষ মেয়র প্রার্থী সম্প্রীতির কথা বলেছেন, কিন্তু এটাই কি সম্প্রীতির নমুনা?’

রোববার সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় ইশরাক প্রতিপক্ষ মেয়র প্রার্থীকে উদ্দেশ করে আরো বলেন, ‘যদি তিনি সত্যিই সম্প্রীতি চান, তাহলে আজ এখন থেকেইে এ ধরনের হামলা বন্ধ করার উদ্যোগ নিবেন।’

বিএনপি মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নগরবাসীর কাম্য। এ জন্য সবার জন্য সমান সুযোগ, নিরপেক্ষ প্রশাসন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অপরিহার্য। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর একটি বিশেষ মহল থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ক্রমেই বিনষ্ট করা হচ্ছে ।আজ সূত্রাপুর ও কোতয়ালী থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডে আমার নির্বাচনী প্রচারণা ও গণসংযোগের কর্মসূচি ছিল। ঢাকা জজকোর্ট এলাকা থেকে এই প্রচারণা শুরু করে তাঁতীবাজার, শাখারীবাজার হয়ে নয়াবাজারে মধ্যাহ্ন বিরতি দেয়া হয়। বিরতির পর সেখান থেকে পুনরায় প্রচারণা চালানোর সময় পুলিশ অহেতুক আমাদের কয়েকজন কর্মীকে হয়রানি করতে থাকে। সে সময় আমি সরাসরি গিয়ে হস্তক্ষেপ করায় পুলিশ নিবৃত হয়। কিন্তু গণসংযোগ চালিয়ে আমি সামনে এগিয়ে গেলে পেছন থেকে আমার ৪ জন কর্মীকে আটক করে। এ খবর শোনা মাত্র আমি বংশাল থানায় যাওয়ার উদ্যোগ নেই। কিন্তু তখন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, কাউকে আটক করা হয়নি।’

‘এরই মধ্যে খবর আসে ওয়ারী থানার অধীন বলধা গার্ডেন এলাকায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৫ জন কর্মীকে (আরিফ, সুমন, জুয়েল, বাবু ও সেলিম) ধানের শীষ পোষ্টার লাগানোর সময় পুলিশ আটক করে। পরে আমি সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। এর পরপরই পুলিশ তাদের ছেড়ে দেয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘হাজারীবাগ পার্কের সামনে থেকে আমার প্রচার কাজ চালানোর সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা রিকশার গতিরোধ করে ২ জন কর্মীকে মারধর করে মাইক ও মাইকের সরঞ্জাম রেখে দেয় এবং পরবর্তীতে থানা পুলিশে দেয়ার হুমকি দেয়। প্রায় একই সময় ৩৮ নং ওয়ার্ডস্থিত ৩ নং যোগীনগর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী মেহেরুন নেসার নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। এ হামলায় শ্রমিক দলের ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুস সালাম গুরুতর আহত হয়।’

ইশরাক আরো জানান, ৬২ নং ওয়ার্ডস্থিত নয়ানগর এলাকার যাত্রাবাড়ী থানার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ইয়ামিন, ইয়াছিন ও ইমন’কে ধানের শীষের পক্ষে পোষ্টার লাগানোর কারণে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করে। কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এহসান মামদুদ, নিখিল চন্দ্র শ্রাবন ও সিরাজ ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ শেষে গোপীবাগ আসার পথে যোগীনগর এলাকায় স্থানীয় যুবলীগ কর্মীরা হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হয়। ২৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সাহিদা মোর্শেদ-এর প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. তামিম ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রাকিবসহ অন্যরা প্রচারণা না করার হুমকি এবং তার বাসায় গিয়ে নেতা-কর্মীদের দীর্ঘ ৫ ঘন্টা আটকে রাখে। সকাল ১১:০০টায় নূরফাতে আলী লেনে বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ ও লাটিম মার্কার প্রচারণাকালীন বেলা ১২:৩০টার দিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নেতৃত্বে পুলিশসহ তার নেতা-কর্মীদেরকে নিয়ে সাহিদা মোর্শেদ এর প্রচারণা বাধাগ্রস্থ করে এবং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতির চশমা নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে।আওয়ামী লীগ কর্মী পাভেল ও রনি ৪১নং ওয়ার্ডের ২৩নং ওয়্যারষ্ট্রীটের সামনে থেকে ধানের শীষের পক্ষে মাইকিং করার সময় মাইক ভাংচুর করে এবং জুয়েলকে মারধর করে আওয়ামী লীগ অফিসে নিয়ে যায়।

ইশরাক বলেন, ‘গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আমার গোপীবাগের বাসার গলিতে যুবলীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসে এবং উসকালীমূলক শ্লোগান দিতে থাকে। এ সময় আমার কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে আমি নিচে নেমে এসে সকলকে নিবৃত করে ভেতরে চলে যাই। পরবর্তীতে আবারো তারা উসকানীমূলক শ্লোগান ও বক্তব্য দিতে থাকে। উপস্থিত সমর্থকদের ধাওয়ার মুখে যুবলীগ সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢিল মেরে দু টি গাড়ীর গ্লাস ভাংচুর করে এবং তাদের হাতে আমার একজন কর্মী আহত হয়।’

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com